পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
দারোগার দপ্তর, ১৯৫ সংখ্যা।

বাহুদ্ধয় শীর্ণ কিন্তু আজানুলম্বিত, তাহার কেশে জটা, সর্ব্বাঙ্গ যেন ভস্মাবৃত। বক্ষে ললাটে হস্তে তিলক-মাটীর ছাপ। ফকিরের পরিধানে একখানি গৈরিক বসন ভিন্ন অর কিছুই ছিল না। তাহার মুখে একটা ক্ষতচিহ্নও ছিল। তাহার গলদেশে কতকগুলি রুদ্রাক্ষ ও কতকগুলি বড় বড় পাথরের একগাছি মালা ছিল। পাথরগুলি মূল্যবান কি না, জানিতে পারিলাম না; কিন্তু তাহার মধ্যে এক একখানি প্রস্তর ডিম্বের মত বৃহৎ ছিল।

 কুটীরের বাহিরে তাহার উত্তর পার্শ্বে দুইটী খড়ের স্তুপ ছিল। সেখানে গৌরীপঙ্করের বাৎসরিক খড় সঞ্চিত থাকে। ঘরের মেঝে ও উদ্যানের সেই অংশের মাটী এত শক্ত যে, সেখানে কোনরূপ ‘পদচিহ্ন থাকিবার সম্ভাবনা নাই।

 সে যাহা হউক, আমি অগ্রে ফকিরের মৃতদেহ উত্তমরূপে পরীক্ষা করিলাম। পরে ঘরের মেঝের উপর যাহা কিছু চিহ্ন ছিল তাহাও বিশেষ করিয়া দেখিলাম। পরে কুটীরের দ্বার ও নিকটবর্ত্তী স্থানসকল ভাল করিয়া লক্ষ্য করিতে লাগিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেখানে বিশেষ কিছু দেখিতে পাইলাম না। একে সেখানকার জমী অত্যন্ত শক্ত, তাহার উপর সেখান দিয়া এত লোক যাতায়াত করিয়াছিল যে, সহজে কোন চিহ্ন দেখিয়া কিছু অনুমান করিবার সম্ভাবনা ছিল না।

 এই সমস্ত কার্য্য শেষ করিয়া আমি আবদুল কাদেরকে বলিলাম, “আবদুল! ফকিরের লাস পরীক্ষা করিলাম বটে, কিন্তু বিশেষ কিছুই বুঝিতে পারিলাম না। গৌরীশঙ্কর বাবু বিচক্ষণ ব্যক্তি, তিনি এই কুটীরের দ্বার রুদ্ধ করিয়া বিশেষ বুদ্ধির কার্য্য করিয়াছেন, কিন্তু কুটীরের বাহিরে এতগুলি চিহ্ন রহিয়াছে যে, তাহা হইতে