এই শক্ত জমীর উপর যে সকল চিহ্ন হইয়াছে, তাহা এত অপরিষ্কার ও এত অপরিস্ফুট যে, সহজে কোন লোক কিছুই স্থির করিতে পারিবে না। বিশেষতঃ দামোদরের বয়স হইয়াছে। সে যে ঐ সকল চিহ্ন ভাল করিয়া দেখিতে পাইয়াছে, তাহাও বোধ হয় না। সুতরাং দামোদরকে আর কষ্ট দিবার প্রয়োজন নাই। সে যখন সাধ্যমত চেষ্টা করিয়াছে, তখন তাহাকে পুরস্কার দিয়া বিদায় কর, এবং যত শীঘ্র পার ফকিরের মৃতদেহ পরীক্ষার জন্য শব-ব্যবচ্ছেদ আগারে পাঠাইয়া দাও। এখনও যথেষ্ট সময় আছে। যতক্ষণ না ডাক্তার সাহেবের রিপোর্ট পাইতেছি, ততক্ষণ আমি এইখানেই থাকিব। হয় ত আজিকার রাত্রে আমাকে এই স্থানেই বাস করিতে হইবে।”
আমার কথা শুনিয়া আবদুল কাদের অতি গম্ভীরভাবে উত্তর করিল, “হুজুর যাহা আদেশ করিবেন আমি তাহাই সম্পন্ন করিব। হুজুর যখন এই স্থানে রাত্রে থাকিবার বন্দোবস্ত করিতেছেন, তখন এই অভাগাকেও এই স্থানে থাকিতে হইবে। কিন্তু—
আবদুল কাদের কখনও অল্প কথায় সন্তুষ্ট হইত না। একটী কথা জিজ্ঞাসা করিলে, তাহার উত্তর দিবার পূর্ব্বে সে নানা প্রকার ভূমিকা না করিয়া কোন কথা বলিতে পারিত না। কিন্তু সকল সময় তাহার কথা ভাল লাগে না। যখন কাজ কর্ম্ম না থাকে, তখন তাহার কথা শুনিতে নিতান্ত কষ্ট বোধ হয় না, কিন্তু কাজের সময় যখন এক মুহূর্ত্তকালও নষ্ট করা যায় না, সেই সময়ে আমি অত্যন্ত বিরক্ত হইতাম।
আবদুলকে বাধা না দিলে সে আরও কত কি বলিত। কিন্তু আমার আর ভাল লাগিল না। বলিলাম, “সকল সময় বেশী