পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দারোগার দপ্তর, ১৯৫ সংখ্যা।

দাতা ফকিরকে হত্যা করিয়া পলায়ন করিয়াছে। সেই আমার ভয়ানক শত্রু। কিসে আমার ও আমার পরিবারবর্গের অপকার করিবে, ক্রমাগত এই চিন্তা করিয়া শেষে হয়ত এই ভয়ানক কার্য্য সম্পন্ন করিয়াছে। আপনি আমায় সন্দেহের কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন বলিয়া এই কথা বলিতে বাধ্য হইলাম; নতুবা এ সকল কথা উত্থাপন করিবার আমার ইচ্ছা ছিল না।”

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “যখন কোনরূপ প্রমাণ দেখাইতে পারিবেন না, যখন সেই লোককে ধরাইয়া দিতে সক্ষম হইবেন না, তখন আপনার এইরূপ সন্দেহের কারণ কি? আর এ কথা উখাপনই বা কেন করিতেছেন?”

 গৌ। হরশঙ্কর দুর্দান্ত লোক। যে পিতৃহত্যা করিতে পারে, তাহার নিকট কিছুই অসাধ্য নহে। আমার সন্দেহ এই যে, সে বিশ বৎসর কারাদণ্ড ভোগ করিয়া মুক্তিলাভ করিয়াছিল এবং পুনরায় স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়া আমার ও আমার পরিবারবর্গের অপকার করিতে মনস্থ করিয়াছিল। ছদ্মবেশে না আসিলে পাছে আমি দুর করিয়া দিই, এই ভয়ে সে ঐরূপ বেশে এখানে আসিয়া আমারই উপকারী মন্ত্রীর প্রাণসংহার করিয়াছে।

 আ। তবে কি সেই-ই ফকিরকে হত্যা করিল! কিরূপেই বা হত্যা করিল? আর কোন লোক কি ফকিরের নিকট আসিত?

 গৌরীশঙ্কর কোন উত্তর করিলেন না। তিনি গম্ভীরভাবে আপনার মস্তক কুণ্ডরন করিতে লাগিলেন। কিছুক্ষণ পরে বলিলেন, “জগদীশ্বর জানেন, কে ফকিরকে হত্যা করিল কিন্তু তাঁহার মৃত্যুতে আমায় যৎপরোনাস্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হইয়াছে। এখন হুজুরের নিকট আমার একটী নিবেদন আছে।