প্রথমতঃ তাঁহার ভূতপূর্ব্ব মনেজার, দ্বিতীয়তঃ তাঁহারই সহোদর ভ্রাতা। এই উভয়ের মধ্যে কেহ ফকিরকে হত্যা করিয়াছে, ইহাই গৌরীবাবুর ধারণা। তুমি কি বিবেচনা কর? এই উভয়ের মধ্যে তুমিই বা কাহাকে হত্যাকারী বলিয়া সাব্যস্ত কর।”
আবদুল করযোড়ে সবিনয়ে উত্তর করিল, “হুজুর! আমি আপনার ক্রীতদাস বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। যখন আপনি এখানে উপস্থিত রহিয়াছেন, তখন আমি কোন ছার—আমার অনুমানেই বা আপনার কি সাহায্য হইবে। বিশেষতঃ আপনার সম্মুখে আমার মতামত প্রকাশ করা নিতান্ত বাতুলের কার্য্য। কিন্তু আমি যে হুজুরের কার্য্যে এই ত্রিশবৎসর কাল অতিবাহিত, করিলাম, তাহা কি সম্পূর্ণ বিফল হইবে? না, তাহা কখনও হইতে পারে না। সেই জন্য বলিতেছি যে, হুজুর কিছুদিন এখানে থাকিয়া এই বিষয় ভাল করিয়া লক্ষ্য করুন, তাহা হইলেই সমস্ত রহস্য ভেদ করিতে পারিবেন। আমিও নিশ্চিন্ত থাকিব না—প্রাণপণে হুজুরের সাহায্য করিব।”
আবদুলের কথায় কর্ণপাত না করিয়া আমি বলিলাম, “খাঁ সাহেব। ভবিষ্যতে যেরূপে পার সাহায্য করিও, কিন্তু এখন আমার গোটা কতক প্রশ্নের উত্তর দাও।”
এই বলিয়া যে লাঠীর দ্বারা সেই ফকিরকে হত্যা করা হইয়াছিল, সেই লাঠীগাছটী লইয়া আমি আবদুলকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “এই লাঠীই কি ফকিরের হস্তে থাকিত?
আবদুল কিছুক্ষণ চিন্তা করিয়া উত্তর করিল, “আজ্ঞা হাঁ হুজুর! এই লাঠীই সর্ব্বদা তাঁহার হাতে থাকিত। ইহা না লইয়া। তিনি তাঁহার কুটীর ত্যাগ করিতেন না।”