আবদুল ঈষৎ হাসিয়া উত্তর করিল, “হুজুর! আপনার আশীর্ব্বাদে এ অঞ্চলের এমন গ্রাম নাই যেখানে এ অধীন প্রত্যহ না আইসে। আমি বেশী কথা বলিতে ইচ্ছা করি না। হুজুরের সময় অতি মূল্যবান তাহা আমি বেশ জানি। কিন্তু এ অঞ্চলের এমন কোন বাড়ী ঘর মাঠ বা বৃক্ষ নাই, যাহা আমি না জানি। সেদিনের সেই অদ্ভুত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপার,—”
বাধা দিয়া আমি আবদুলকে বলিলাম, “থাক্ থাক্, আর সে কথা তুলিবার প্রয়োজন নাই। এই সকল মাঠের এমন অবস্থা কেন, যদি তোমার জানা থাকে, তবে অতি অল্প কথায় বল।
আবদুল ঈষৎ হাসিয়া অতি আগ্রহ সহকারে বলিল, “দুই কথায় আমি আপনাকে সমস্তই বুঝাইয়া দিতেছি। আপনার মত বিচক্ষণ লোককে অধিক কথা বলিবার আবশ্যক হয় না। আপনার মত জ্ঞানী কয়জন আছে? আমি কি জানি না যে, আপনার সময়ের মূল্য কত? কতকগুলা অনাবশ্যকীয় কথা বলিয়া আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করা—”
আমি আর সহ্য করিতে পারিলাম না। এদিকে আমাদের গাড়ীও সরকারদিগের বাড়ীর দরজায় আসিল দেখিয়া বলিলাম, “থাক আবদুল! আর তোমার দুই কথায় বুঝাইবার প্রয়োজন নাই। আমরা কার্য্যস্থানে আসিয়া পড়িয়াছি।”
আবদুল আমার কথায় কিছুমাত্র লজ্জিত হইল না। সে নিস্তব্ধভাবে গাড়ী হইতে অবতরণ করিল। আমিও নামিয়া পড়িলাম। দেখিলাম, একজন প্রৌঢ় দ্রুতপদসঞ্চারে আমার দিকে আসিতেছেন। নিকটে আসিলে দেখিলাম, তাঁহার বয়স চল্লিশ বৎসর। তাঁহার দেহ নাতিদীর্ঘ নাতিখর্ব্ব, বর্ণ গৌর কিন্তু