পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যা-কাণ্ড পুজার ফলভাগী হয় ; সন্দেহ নাই" । ঐরামচন্দ্র জিজ্ঞাসিত হইয়া পরম ভক্ত শেষাবতার মহাত্মা লক্ষ্মণের নিকট সর্বোত্তম ক্রিয়া-যোগ এইরূপে । কহিলেন । পুনরায় প্রাকৃত মনুষ্যের ন্যায় মায়াবলম্বন পুর্ব্বক অতি দুঃখসহকারে হ, সীতা, বলিয়া বিলাপ করিতে লাগিলেন । কোনরূপেই নিদ্রা আসিল না । এই সময়ে তুবুদ্ধ হনমান কিষ্কিন্ধ্যা নগরে কপিরাজ সুগ্রীবকে নির্জনে কহিল;—“হে মহারাজ ! আপনারই পরম হিতকথা বলিতেছি, অগ্রেই শ্রীরাম আপনার অতিশয় উপকার করিয়াছেন, এক্ষণে আমার বিবেচনা হয়, আপনি তাহ বিস্মৃত হইয়া কুতন্ত্রের ন্যায় নিশ্চিন্ত রহিয়াছেন । শ্রীরাম, আপনার নিমিত্ত ত্রিলোকবিখ্যাত মহাবীর বালীকে নিহত করিয়াছেন ; আপনাকে কিষ্কিন্ধ্যারাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন; সেই জন্যই আপনি পরম দুল্ল ভা তারাকে প্রাপ্ত হইয়াছেন : এক্ষণে সেই শ্রীরামচন্দ্র অনুজের সহিত পর্ব্বতশৃঙ্গে বাস করিয়া গুরুতর কার্য্যানুরোধবশতঃ আপনার আগমন-পথ নিরীক্ষণ করিতেছেন ; আপনি বানরত্ব-হেতু স্ত্রীতে আসক্ত হইয়। কিছুই বিবেচনা করিতেছেন না । আপনি সীতা অন্বেষণ করিব বলিয় প্রতিজ্ঞ করিয়াছেন; এক্ষণে কিছুই করি. তেছেন না। আপনি অতি কৃতঘ্ন,জ্জতএব সত্বর বালির ন্যায় আপনিও নিহত হইবেন" ; মুগ্রীব-হনুমানের বাক্য শ্রবণানন্তর ভয়াকুল হইয়া কহিল;—“তুমি যথার্থ কথাই বলিয়াছ, অতএব শীঘ্র আমার আজ্ঞা পালন কর ; এখন সত্বর মহাবেগসম্পন্ন দশ সহস্র বানর সৈন্য দশদিকে শীঘ্র প্রেরণ কর । ইহার সপ্তদ্বীপস্থ | একপক্ষ মধ্যে । কৃতকার্য্য হইয়া সকল বানরশ্রেষ্ঠগণ প্রত্যাগমন । এক পক্ষকাল অতিবাহিত । করবে—তাহার নিশ্চয় আমার বধ্য হইবে।” সুগ্রীৰ । হনমানকে এরূপ আদেশ করিয়া গৃহে প্রবেশ । করিল। মন্ত্রিবর মুবুদ্ধি হনুমানূ সুগ্রীবের আজ্ঞানু | সারে তৎক্ষণাৎ দশ দিকে বানর-সৈন্য প্রেরণ ; বানরসমূহকে আনয়ন করুক । করিবে । যাহার هي જે পঞ্চম অধ্যায় । । এদিকে প্রদোষ সময়ে মণি-সামু সুন্দর পর্বতশিখরে উপবিষ্ট রামচন্দ্র সীতা-বিরহ-সস্থত শোকবেগ সহ করিতে না পারিয়া লক্ষ্মণকে এই কথা বলিলেন;–“দেখ লক্ষ্মণ, আমার সীতাকে রাক্ষস, বলপুর্ব্বক হরণ করিয়া লইয়া গিয়াছে ; জানিতে পারিতেছি না—আমার সেই অভিমানিনী অদ্যাপি জীবিত আছে কি না ? যদি কেহ আমাকে জীবিত আছে", বলিতে পারে, তাহা হইলে সে আমার অতি প্রিয়কারী হয়। যদি জানিতে পারি, সেই সাধবী, যে কোন স্থানেই হউক জীবিত আছে, তাহা হইলে আমি ক্ষীরসাগর হইতে সুধার ন্যায় তাহাকে এইক্ষণেই আনয়ন করি। ভাই ! আমার প্রতিজ্ঞ শুন;—যে আমার জনকনন্দিনীকে হরণ করিয়াছে, পুত্রগণ, সৈন্যগণ এবং অশ্ব-গজ-প্রভৃতি বাহন সমেত তাহাকে ভস্মসাৎ করিব। হা শশিমুখি! সীতে। তুমি রাক্ষস-গৃহে অবস্থিতি করিতে্যু,আমাকে দেখিতে পাইতেছ না ; অতএব এই বিষম দুঃখে কাতর হইয়। কিরূপে জীবন ধারণ করিবে ? সেই চন্দ্রাননার বিরহে হিমকরও উষ্ণরশ্মির স্যায় প্রতীয়মান হইতেছে। সুধাকর । তুমি তোমার করনিকর দ্বারা জানকীকে স্পর্শ করিয়া সেই কর দ্বারা আমাকে স্পর্শ কর ;–ণীতল বোধ হইবে । সুগ্রীবও নিষ্কটক রাজা পাইয়াছে ; এখন পানরত অতি কামুক্ত অবস্থায় নিভুত প্রদেশে স্ত্রীগণে পরিবৃত হইয়া আছে ; সে নির্দয় ; দুঃখিত আমার প্রতি বৃক্কুপাত করিতেছে না । অতএব স্পষ্ট বুঝতে পারিতেছি, সে কৃতঘ্ন । শরৎকাল উপস্থিত হইয়াছে দেখিয়াও, সুগ্রীব আমার প্রিয়তমাকে অন্বেষণ করিবার নিমিত্ত্ব আসিতেছে না। সেই কৃতঘ্ন নিশ্চয়ই আমার কুত পূর্ণ উপকার বিস্মৃত হইয়াছে। নগর এবং বান্ধবগণের সহিত সুগ্রীবকেও সীতা-হর্ত্তার ন্যায় বিনাশ করিব । বালী লেমন আমার হস্তে নিহত হইয়াছে, কলি পবনের প্রিয়-নন্দন হনুমান, অসীমণ্ডপশালী । আজ স্বগ্রীবও সেইরূপ হইবে।” বিক্রম-সম্পন্ন বায়ু-সদৃশ বেগগামা পর্ব্বতাকার । বনচর-শ্রেষ্ঠ দূতগণকে অর্থ ও সন্মান প্রদান । দ্বারা পরিতুষ্ট করিয়া অতি ব্যগ্রতা সহকারে । প্রেরণ করিলেন । চতুর্থ অধ্যায় সমাপ্ত । • লক্ষ্মণ রামচন্দ্রকে এইরূপ কুপিত দেখিয়া বলিলেন, “রঘুবর! আমাকে আদেশ করুন, আমি এখনই গিয়া সেই দুষ্ট-হৃদয় সুগ্রীবকে বধ করিয়া আপনার নিকট ফিরিয়া আদিব” । এই বলিয়া লক্ষণ ধনুঃ, খড়গ এবং তৃণীর গ্রহণ পূর্বক যাইতে । উদ্যত হইলেন দেখিয়া শ্রীরাম লক্ষ্মণকে বলিলেন; “বৎস! সুগ্রীবকে বধ করিও না, সে আমার প্রিয়সখা । কিন্তু তোমাকেও বালীর ন্যায় বধ করা