পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধা-কাণ্ড উহাকে রক্ষা করিয়াছেন ; এক্ষণে মহামতি নুগ্রীৰ আপনাদিগের প্রসাদেই মুখ-সম্পত্তি লাভ করিয়াছেন ; সুতরাং কামাসক্ত হইয়াছেন বটে ; কিন্তু বানররাজ হুগ্রীব, রঘুপতি রামচন্দ্রের সেবা করি, বার নিমিত্ত গমন করিয়াই রহিয়াছেন। প্রভো । নানা-দেশ-স্থিত বানরগণ আগমন করবে। হে রঘু শ্রেষ্ঠ ! দিগ দিগন্ত হইতে মহাপর্বত সদৃশ বানর. গণকে আনয়ন করিবার জন্য সুগ্রীব দশ সহস্র বানরকে পাঠাইয়াছেন। সুগ্রীব সকল বানরসেনানীগণের সহিত স্বয়ং গমন করিয়া সেনানীগণের দ্বারা রাক্ষসনিকর বধ করাইবেন এবং স্বয়ং রাবণ বধ করিবেন। ধানর-শ্রেষ্ঠ, অদ্যই তোমার । সহিত গমন করিবেন। দেখ গিয়া, তিনি ভবন । মধ্যে পুল-কলত্র-বন্ধু-বান্ধবে পরিবৃত হইয়া রহিয়া- ৷ ছেন ; দেখিয়া সুগ্রীবের প্রতি অভয় দান করিয়া র্তাহাকে সঙ্গে করিয়াই লইয়া যাও ।” তারার বচন শ্রবণ করিয়া লক্ষ্মণের কোপ হ্রাস হইল ; অনস্তর লক্ষ্মণ, যে স্থানে বানরেশ্বর সুগ্রীত্ব অবস্থিত ছিল, সেই অন্তঃপুরে গমন করিলেন । সুগ্রীব রুমাকে আলিঙ্গন করিয়া পর্যাঙ্কে অবস্থিত ছিল, লক্ষ্মণকে দেখিবা মাত্র নিরতিশয় ভীতের ন্যায় পর্য্যক্ষ হইতে উখিত হইল। লক্ষ্মণ সেই মদ-ঘূর্ণিত লোচন সুগ্রীবকে দেখিয়া সক্রোধে বলিতে লাগিলেন ;— “দুর্ব্বত্ত । রঘুবরকে ভুলিয়া গিয়াছিল। যে বাণ দ্বারা বালী নিহত হইয়াছিল, আজ সেই বাণ তোর প্রতীক্ষা করিতেছে ; আমার হস্তে নিহত হইয়া তুইও বালীর পথে গমন করিবি।” তখন লক্ষ্মণ এইরূপ অত্যন্ত পরুযোক্তি করিতে থাকিলে বীর হনুমান বলিতে লাগিলেন;–“এরূপ বলিতেছেন কেন ? আপনি যতদূর ভক্তি করেন, এই বানর-রাজ,রাঘবকে তাহ অপেক্ষা q} কিছু বলিয়াছি, তাহা ক্ষমা কর ; আমি প্রণয়-কোপবশতঃই তাহ বলিয়াছি। হে হুগ্রীব ! অদাই গমন কৰিব ; প্রভু রাম জানকীরিহে অতীব দুঃধিত হইয়া একাকী বনমধ্যে রহিয়াছেন।” কপিরাজ “যে আজ্ঞা", বলিয়া, লক্ষ্মণের সহিত রথে আরোহণ করিয়া বানরগণ সমভিব্যাহারে রাম-দর্শনে যাত্রা করিলেন। তখন ভেরী ও মৃদঙ্গের ধ্বনি হইতে লাগিল ;–শ্বেতছত্র এবং চামর-ব্যজন শোভিত্ত হইল ;–বানররাজ ;–হনুমান,নীল ও অঙ্গদ প্রভৃতি বহুতর বানর এবং ভল্লুকগণে পরিবৃত হইয়া রাম সমীপে গমন করিবুেন। - পঞ্চম অধ্যায় সমাপ্ত । ষষ্ঠ অধ্যায় । সুগ্রীব ও লক্ষ্মণ দেখিলেন, শাস্ত-স্বভাব রামচন্দ্র সীতা-বিরহ-সপ্তপ্ত হইয়া গুহাম্বারের একখণ্ড প্রস্তরে বসিয়া আছেন;–র্তাহার পরিধানে জীর্ণ বস্ত্র ও মৃগচর্ম্ম; বর্ণ-গুম;মস্তকে জটা-ভার; নয়নদ্বয় বিশাল;বদনকমল ঈষৎহাস্যে শোভিত ; এবং ঔদাস্তব্যঞ্জক ; দৃষ্টি পশুপক্ষীদিগের উপরবিন্যস্ত ছিল ;–দেখিবামাত্র দূরে রথ হইতে অবতরণপূর্বক বেগে আসিয়া ভক্তি সহকারে রামচন্দ্রের চরণযুগল সন্নিধানে নিপতিত হইলেন । ধর্ম্মজ্ঞ রাম সুগ্রীবকে অলিঙ্গন ও অনাময় জিজ্ঞাসা করিয়া স্বীয় পার্থে উপবেশন করাইবার পর যথোচিত সম্মান প্রদর্শন করিয়াছিলেন । অন. স্তর ভক্তিবিনম-চিত্ত সুগ্রীব রঘুবরকে বলিলেন;– “দেব। বানরগণের মহাচমু আসিতেছে অবলোকন করুন । কামরূপী অসংখ্য বানর আসিতেছে । ইহাদিগের অনেকের উৎপত্তি হিমালয় প্রভৃতি কুলা অধিক ভক্তি করিয়া থাকেন; নিরস্তর রাম-কার্য্যের | চলে ; এবং অনেকেই মেরু বা মন্দর পর্বত সদৃশ ; জন্য উদ্যোগী হইয়া রহিয়াছেন বিস্মৃ হন নাই ; প্রভো! দেখুন চতুৰ্দিক্ হইতে কোটি কোটি বানর আসিয়াছে ; সীতার অন্বেষণ করিতে অচিরেই গমন করিবে; সুগ্রীব সম্পূর্ণরূপে রাম-কার্য্য সাধন করি. বেন” । সুমিত্রাতনয় হনুমানের কথা শুনিয়া লজ্জিত হইলেন। সুগ্রীবও পাদ্য অর্ঘ্য প্রভৃতি দ্বারা লক্ষ ণের সম্পূর্ণরূপে পূজা করিলেন ; এবং তাঁহাকে আলিঙ্গন করিয়া বলিলেন;–“আমি রামের দাস এবং তাঁহারই রক্ষিত ; রাম স্বীয় তেজে ক্ষণাদ্ধের মধ্যে ত্রৈলোক্য জয় করিতে পারেন। প্রভো | বানর. বুদের সহিত আমি তাহার উপলক্ষ মাত্র। সৌমিত্রিও সুগ্রীবকে বললেন;–“হে মহাভাগ! আমি যাহা অনেকের নিবাস নানা দ্বীপে, নানা নদীতীরে এবং নানা পর্ব্বতে ; সকলেরই দেহ পর্ব্বতবং দৃঢ়। ইহার সকলেই দেবাংশসস্তৃত এবং যুদ্ধ-বিশারদ। ইহদিগের মধ্যে কতকগুলি বানর এক হস্তীর স্তার বলবান, কতকগুলি দশ হস্তীর সমান ও কতকগুলি অযুত হস্তীর সমান বল-সম্পন্ন ; এবং হে প্রভো! এতদ্ভিন্ন অনেকেরই বল অপরিমেয় । কতকগুলির বর্ণ অঞ্জন-পুঞ্জের স্কায় ; কতকগুলির কাস্তি সুবর্ণের থায় ; কাহাদিগেরও বদন রক্তবর্ণ; এবং অপর কতকগুলি লোমরাজি-দীর্ঘ। কাহাদিগেরও কান্তি শুদ্ধ স্ফটিক তুল্য; কাহাত্মাও বা রাক্ষসবধ ঘোর দর্শন। বানরগণ যুদ্ধাভিলাষী হুইয়া গর্জন করত