পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ8 মনুষ্যাদি যোনিতে জন্ম এবং তদনুরূপ কার্য্যাদি, তাহা কেবল অনুকরণমাত্র । কেহ কেহ বলেন, তুমি নির্ব্বিকার হইলেও আপনার চরিত-বর্ণনাদি-কথা শুনাষ্টয় লোককে সিদ্ধ করিবার অভিপ্রায়ে আবিভূত হইয়াছ ; কেহ কেহ বলেন, কোশল রাজ দশরথের তপস্যার ফলসিদ্ধি করিতে অবতীর্ণ হুইয়াছ; অন্য কোন কোন লোকে বলেন, কৌসল্যার প্রার্থন মতে তুমি জন্মগ্রহণ করিয়াছ ; পৃথিবীর ভারভূত দুষ্ট রাক্ষসদিগকে বধ করিতে ব্রহ্মা প্রার্থনা করেন, তদনুসারে প্রভু এই মনুষ্যরূপে অবতীর্ণ হইয়াছেন, ইহাও কেহ কেহ বলেন । স্বাহাই হউক না কেন হে রঘুনন্দন । র্যাহারা আপনার কথা শ্রবণ বা কীর্ত্তন করেন, তাহারাই ভব-সাগর-নিস্তারক তোমার ঐপাদপদ দর্শন করিতে পান। দেব। তুমি তোমার মায়া-পাশ,বদ্ধ অভিমানী জীবগণ হুইতে বিভিন্ন ও ত্রিগুণ পরিচালক, আমি তোমাকে বুঝিব কিরূপে ? বিশেষতঃ প্রভূ তুমি বাকৃ-পথাতীত ; তোমার স্তব করিব কিরূপে ? সুতরাং অনুজ লক্ষ্মণ এবং সুগ্রীবাদি সহচরগণে পরিবৃত ধনুর্ব্বাণধারী রঘু বরকে (কেবল) নমস্কার করি ” এইরূপ স্তব করিলে পর ভক্ত-জনের পাপ-নাশক রঘুবর প্রসন্ন হইয়া ভক্তিমতী যোগিনীকে বলিলেন, “তোমার মনোবাঞ্জা কি ?” যোগিনী ভক্তি সহকারে রাঘবকে বলিলেন, “হে ভক্তবৎসল ! হে প্রভো! আমি যে খানেই জন্ম গ্রহণ করি না কেন, তোমাতে যেন আমার অচলা ভক্তি থাকে প্রাকৃত ব্যক্তিদিগের সহিত নহে ; সর্ব্বদাই যেন তোমার ভক্তবৃন্দের সহিত সঙ্গ হয় ; আমার রমনা যেন ভক্তিপূর্বক সর্ব্বদ “রাম রাম”, এই নাম উচ্চারণ করে; হে রাম ! আমার মন যেন সর্ব্বদা পার্থে লক্ষ্মণ সীতা ; হস্তে শর-শরাসন তৎসমুদায় শ্রবণপুর্ব্বক অঙ্গদকে আলিঙ্গন করিয়া পরিধানে পীতবস্ত্র ; অঙ্গদ-নূপূৰ্ব-মুক্তাহার-কৌস্তুভকুণ্ডল এবং মুকুট-ভূষিত প্রশান্ত শুrামরূপ স্মরণ করে । হে প্রভো ! আমি অস্তুবর প্রার্থনা করি না "। ঐরাম বলিলেন;–“মহাভাগে ! তথাস্ত’ ; এক্ষণে অধ্যাত্ম-রামায়ণ সপ্তম অধ্যায় । এদিকে সেই সকল বানৱগণ সেই বনমধ্যে তরু-সমূহের উপর উপবিষ্ট হইয়া চিন্তা করিতে লাগিল ; তাহারা সীতা অন্বেষণ করিতে করিতে ক্লেশে কৃশ হইয়াছিল ; সাঁতার অনুসন্ধান না পাওস্থায় কিংকর্ত্তব্যবিমূঢ় হইল। তখন বানর. শ্রেষ্ঠ অঙ্গদ কতকগুলি বানরকে বলিতে লাগিল “গহবর মধ্যে ভ্রমণ করিতে করিতে নিশ্চয় আমাদিগেয় এক মাসকাল অতীত হইয়াছে। আমর সীতার অনুসন্ধান পাই নাই, রাজার আদেশও পালন করা হয় নাই, এখন যদি কিষ্কিন্ধ্যায় যাই’ ; তাহা হইলে সুগ্রীব আমাদিগকে বধ করিবে । বিশেশতঃ আমি শত্রুর পুত্র ; ছল পাইলেই আমাকে বধ করবে। আমার প্রতি, তাহার প্রীতি নাই ; রাম কেবল আমাকে রক্ষা করিতেছেন। এক্ষণে “আমি রাম-কার্য্য করিতে পারি নাই", জুরাত্মা সুগ্রীবের আমাকে হত্য করিবার এই এক ছল হুইবে । এই পাপাত্মা মাতৃ-তুল্য ভ্রাতৃজায়া সন্তোগ করিতেছে, অতএব হে বানর-পুঙ্গল-গণ! তাহার নিকট গমন করিবন ; এই স্থানেই যে কোন উপায়ে প্রাণত্যাগ করিব।” কতিপয় বানর-শ্রেষ্ঠ, যুবরাজ অঙ্গদকে এই জন্য সজল-নয়ন দেখিয়া ব্যথিত ও সজল, নয়ন হুইল এবং তাহাকে বলিতে লাগিল । এ বিষয়ে কি জন্য তুমি শোক করিতেছ ? আমর তোমার প্রাণ রক্ষা করিব । আইস, আমরা এই গুহ-মধ্য-স্থিত সর্ব্ব-সৌভাগ্য-সম্পন্ন মুর-নগর-সদৃশ, পুরে নির্ভয়ে বাস করিব । এইরূপে পরস্পর ধীরে ধীরে বলাবলি করিতে থাকিলে নীতিজ্ঞ পবন-তনয় কহিল, “কেন এরূপ তর্কবিতৰ্ক করিতেছ ? এইরূপ দুর্ম্মন্ত্রণ করা সম্পূর্ণ অনুচিত । তুমি রাজার অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ; তারার গর্ত সস্তৃত বলিয়া তুমি তাহার সকল প্রিয়পাত্রকে অতিক্রম তুমি বারিকাশ্রমে গমন কর, তুমি সেই খানেই | করিয়াছ, অর্থাৎ তুমি রাজার সর্বাপেক্ষা অধিক আমাকে ধ্যান করত এই পঞ্চ ভূত-ময় দেহ পরিত্যাগ করিয়া অবিলম্বে পরমাত্ব-রূপী আমাকে প্রাপ্ত ! হইবে। তিনি রঘুবরের এই অমৃত-তুল্য বাক্য শ্রবণ করিব মাত্র তৎক্ষণাৎ বদরী-তরু-নিকর শোভিত সেই তীর্থে গমন করিয়া শ্রীরামচন্দ্রে সম্পূর্ণ রূপে মনোনিবেশ করত কলেবর পরিত্যাগ পূর্বক পরম পদ প্রাপ্ত হইলেন । ষষ্ঠ অধ্যায় সমাপ্ত । | প্রিয়। রামের প্রীতি লক্ষ্মণ অপেক্ষাও তোমার উপর দিন দিন বাড়িতেছে। অতএব রাম হইতে বা রাজা হইতে তোমার কোন ভয় নাই; বিশে ষতঃ আমি তোমার হিতসাধনে তৎপর রহিলাম ; বৎস। অন্য বিচার করিও না। কতিপয় বানরেরা ষে বলিয়াছে "গুহাগৃহ অভেদ্য, নির্ভয়ে বাস করিব; তাহাও অযুক্ত; কেননা ত্রিজগতে এমন কি পদার্থ আছে । যাহ রাম শরের অভেদ্য ? হে