পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

م سb আমার খাদ্যদ্রব্য করিয়াছেন " হনুমান তাহাকে বলিল ;–“মাতঃ ! আমি রামের আদেশমত জানকীকে দেখিতে যাইতেছি ; অতি সত্বর ফিরিয়া রামের নিকট র্তাহার মঙ্গল সমাচার দিয়া আসিয়াই তোমার মুখকুহরে প্রবিষ্ট হইব ; এক্ষণে আমাকে পথ দাও, তুমি মুরসা-তোমাকে নমস্কার ” এ কথ বলিলে মুরস পুনর্ব্বার বলিল;—“আমি ক্ষুধিত হই য়াছি, আমার মুখমধ্যে প্রবেশ করিয়া (ক্ষমতা থাকে ত তথা হইতে নির্গমনপূর্ব্বক) গমন কর । নতুবা তোমাকে এখনই আমি ভক্ষণ করিয়া ফেলি” । ইহা বলিলে হনুমান উত্তর করিল,“তবে শীঘ্র মুখ ব্যাদান কর, বড় ত্বর আছে, আজ তোমার মুখে প্রবেশ করিয়া তৎপরেই যাইতেছি", এই বলিয়া হনুমান একযোজন বিস্তৃত শরীর ধারণপূর্বক তদীয় সম্মুখে অবস্থিত হইল। হনুমানের দেহ দেখিয়া সুরস নিজ মুখ পঞ্চযোজন বিস্তৃত করিল হনুমান দ্বিগুণ ( দশযোজন বিস্তৃত) রূপ ধারণ করিল ; অনন্তর সুরসাও বিংশতি যোজন মুখ করিল ; হনুমানৃ ত্রিংশ যোজন পরিমিত দেহু করিল ; সুরস পঞ্চশং যোজন ৰিস্তুত মুখ করিল—তখন হনুমান অঙ্গুষ্ঠ সদৃশ ক্ষুদ্রাকার হইল ; এবং তাহার বদন মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়া নির্গমন পূর্বক পুনর্ব্বার সম্মুখে আসিয়া অবস্থিত হইল। "দেবি ! তোমার বদমে প্রবিষ্ট হুইয়া নির্গত হইয়াছি; তোমাকে নমস্কার।" হনুমান এই কথা বলিলে, মুরস হনুমানূকে বলিতে লাগিল ;–“হে সুধীবর ! যাও রামের কার্য্য সাধন কর । হে কপি! তোমার বল বুদ্ধি জানিতে ইচ্ছুক হইয় দেবগণ আমাকে পাঠাইয়াছেন ; অহে ! যাও ; সীতা দর্শনের পর প্রত্যাগমন করিয়া পুনর্মার রামের সহিত সাক্ষাৎ করিতে পরিবে"। এই বলিয়া সুরসা দেবলোকে গমন করিল, পবননন্দনও পক্ষিরাজ গরুড়ের ন্যায় (সত্বর ) বায়ুপথে আবার গমন করিতে থাকিল । সমুদ্রও মণি-কাঞ্চনপর্ব্বত মৈনাককে বলিল –এই মহাবল পরাক্রাস্ত পবননন্দন হনুমান রামের কার্য সিদ্ধির জন্য গমন করিতেছে, বিশ্রাম স্থান প্রদান কয়৷ তুমি ইহার সাহায্য কর। পূর্ব্বকালে সগর-সন্তানগণ আমাকে বৰ্দ্ধিত করে, এই জন্ত আমার নাম সাগর; প্রভু দাশরথি রাম, সেই সগর-বংশে উৎপন্ন ; এই মহাকপি, তাহার কার্য্য সিদ্ধ করিতে গমন করি তেছে ; অতএব তুমি শীঘ্র জল হইতে উখিত হও; তোমার উপর বিশ্রাম করিয়া গমন করুক ; বিবিধ মণিময় শৃঙ্গে মহোয়ত মৈনাক “আচ্ছা”। অধ্যাত্ম-রামায়ণ বলিয়৷ জলমধ্য হইতে প্রাগ্লুত হইল। মৈনাক সেই পর্ব্বতের উপরে মনুষ্যাকারে অবস্থিত হইয়া গমনশীল হনুমানকে বলিল ; "মহাকপে ! আমি মৈনাক ; তোমাকে বিশ্রাম করাইতে আমি সমুদ্র কর্তৃক আদিষ্ট হইয়াছি; হে পবনতনয়! ভাইস ; আমার অমৃত তুল্য পক্ক-ফলরাশি ভোজন পূর্ব্বক ক্ষণকাল বিশ্রাম করিয়া পশ্চাৎ মুখে গমন করিবে ।” ইহ বলিলে পর বায়ুপুত্র হনুমান তাহাকে বলিতে লাগিল ;–“আমি রাম কার্য্যের জন্য গমন করিতেছি, তাহা না করিয়া আমার ভক্ষণ করা অনুচিত; আর আমাকে অতি শীঘ্র যাইতে হইবে, সুতরাং বিশ্রাম করাই বা কিরূপে সন্তবে "এই বলিয়া বানর, মৈনাকের মানরক্ষার্থ হস্তাগ্র-দ্বারা শিখর স্পর্শ করিয়া গমন করিতে লাগিল। কিছুদূর গমন করিলে পর ছায়াগ্রহ ইহার ছায়া ধরিয়া আকর্ষণ করিল। সেই ছায়াগ্রহের নাম সিংহিকা; সেই ভীষণা সর্ব্বদা জলমধ্যে অবস্থান করে ; এবং আকাশচারীদিগের ছায়া আক্রমণপূর্বক তাহাদিগকে আকর্ষণ করিয়া ভোজন করে। বীর্য্যবান হনুমান তৎকর্তৃক আকৃষ্ট হইয়। চিত্ত করিতে লাগিল ; “অ্যা! কে বিঘ্নকারী হইয়। আমার বেগ রোধ করিল ? কই এখানে ত কাহকেও দেখিতে পাই না, আমার আশ্চর্য্য বোধ হইতেছে।” এইরূপ চিন্তা করত হনুমান অধোভাগে দৃষ্টি সঞ্চালন করিল ; তথায় বিকটাকৃতি মহাকায় সিংহিকাকে অবলোকন করিবামাত্র সত্বর জলে পড়িল এবং ক্রোধাভরে চরণদ্বয় প্রহারে তাহাকে বধ করিল ; পুনর্ব্বার উল্লম্ফনপূর্ব্বক হনমান দক্ষিণাভিমুখে গমন করিতে লাগিল। অনস্তর ফল-হার-নম্র পাদপ-নিকরে শোভিত নানাজাতীয় পশুপক্ষিপূর্ণ কুমুমিত লতাজালে সমাচ্ছন্ন সমুদ্রের দক্ষিণ তীরে উপস্থিত হইয়া তথা হইতে ত্রিকূট গিরিশিখরে অবস্থিত লঙ্কানগর দেখিতে পাইল; নগরের চতুর্দিকে বহুতর প্রাকার এবং পরিখা ছিল । ইহা দেখিয়া “কিরূপে লঙ্কা প্রবেশ করিব”, হনুমান এই চিন্তাই করিতে লাগিল; “নিশাভাগে স্থঙ্করূপে এই রাবণপালিত লঙ্কানগরে প্রবেশ কারব” স্থির করিয়া তথায় অবস্থানপুর্ব্বক উপযুক্ত সময়ের প্রতীক্ষা করিতে লাগিল; পরে (যথাসময়ে) লঙ্কা নগরাভিমুখে গমন করিল। অনন্তর প্রতাপশালী হনুমান স্বক্ষ শরীর ধারণ করিয়া দ্বারে প্রবেশ করিল ; সেখানে রাক্ষসী বেশ ধারিণী মূর্ত্তিমতী লঙ্কার অধিষ্ঠাত্রী দেবী, ‘ হনুমানকে লঙ্কানগরে প্রবেশ করিতে দেখিয়া তাহার প্রতি তর্জন গর্জন করত কহিল ; “কেরে তুই –