পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাপর অসুরদিগের কথা আর কি বলিব ? এ বানর আমাদিগের কি করিবে ? এবং ইহার প্রতি পৌরুষ প্রকাশেই বা ফল কি ? আমরা অবজ্ঞ করিয়াছিলাম বলিয়াই হনুমান এতদূর অনিষ্ট করিতে পরিয়াছে। আমরা এইরূপে উপেক্ষা করিয়াচিলাম ; তাই কিছু বিক্রম প্রকাশ করিয়া গিয়াছে ; তাহাতে আর হইবে কি ; আমরা প্রমাদবশতঃ অবজ্ঞা করিয়াছিলাম, তাহাতেই হনুমানের নিকট বঞ্চিত হইয়াছি। আমরা সকলে যদি তাহাকে বুপিতে পারিতাম, তাহা হইলে সে বঁাচিয়া ফিরিতে পারিত না। তাজ্ঞা করুন, আমরা সকলে এই সমস্ত জগৎকে বানর-শূন্ত এবং মনুষ্য-শূন্ত করিয়া প্রত্যাগত হইতেছি ; অথবা সকলে কেন এক এক ব্যক্তিকেই নিয়োগ করুন ( জগৎকে মানুষ-বানর. শূন্য করিয়া আসিবে) তখন কুম্ভকর্ণ, রাক্ষসরাজ রাবণকে বলিতে লাগিল;—“তুমি যে কার্য্যের উপক্রম করিয়াছ, তাহা কেবল তোমার আত্মনাশের নিমিত্ত। ভাগ্যক্রমে তুমি তখন মহাত্মা রামের দৃষ্ট্রিপথে পতিত হও নাই। হে রাবণ | রাম, যদি তোমাকে দেখিতে পাইতেন, তাহা হইলে তার জীবন থাকিতে ফিরিয়া অসিতে পারিতে ন} । রাম—মনুষ্য নহেন ; সাক্ষাৎ অব্যয় নারায়ণ দেব । রাম-পত্নী যশস্বিনী সীতা সাক্ষাৎ ভগবতী লক্ষী ; রাক্ষসগণের বিনাশার্থই তুমি সেই মুমধ্যমাকে হরণ করিয়া লইয়া আসিয়াছ। মহামৎস্যের বিষপিণ্ড গ্রাস যেরূপ অনর্থকর, তোমার জানকী-হরণও তদ্রুপ; অথবা পরে আরও কিছু হইতে পারে। যে মংস্ক, বিষভোজন করে, সেই মরে ; কিন্তু জানকী হরণ করায় কেবল তুমি নহে— সব মিটাইয়া দিব, সুস্থ-চিত্ত হও।” কুস্তকর্ণের বাক্য অনুমতি করুন; রাম, লক্ষ্মণ, সুগ্রীব এবং অন্যান্ত সকল বানরসেনীগণকে বধ করিয়া আপনার নিকট পুনঃ প্রত্যাগত হইব।” ইত্যবসরে ঐরাম পাদযুগলে একাগ্রচিত্ত ভাগবতপ্রধান, মুধীশ্রেষ্ঠ, বিভীষণ তথায় আসিয়া মুরশত্রু রাবণকে প্রণামপূর্বক উপবেশন করিল। অপ্রমত্ত এবং বিশুদ্ধ-বুদ্ধি বিভীষণ, কুম্ভকর্ণ প্রভৃতি রাক্ষস এবং মান্যবর মত্ত এবং প্রমত্ত রাক্ষসকে * অবলোকন করিয়া

  • "कूडकर्न अ इङि 1 * করিয়া’ইছ টকা,সন্মত্ত অনুবাদ ।

করা আমার অনুচিত । শ্রবণ করিয়া ইন্দ্রজিৎ বলিল ;–“দেব ! আমাকে । রাঙ্কলকে অত্যন্ত মত অবলোকন অধ্যাজু-রামায়ণ । অতীব বিস্ময় সহকারে কামাতুর দশাননের প্রতি দৃষ্টিপাত করত কহিল;—“রাজনৃ! কুম্ভকর্ণ,ইন্দ্রজিৎ, মহাপার্শ্ব, মহোদর, নিকুস্ত,কুন্ত, বা অতিকায়, কেহই রণস্থলে রাম-সম্মুখে অবস্থান করিতে পারবে না। রাজনৃ! আপনি সীতানামক মহাগ্রহে গ্রস্ত হইয়াছেন; আর আপনার মুক্তি নাই; তবে সেই সীতাকেই রত্নাদিদ্বারা সম্মানিত করিয়া রামের হস্তে প্রত্যপণ করিলে সুখী হইতে পারবেন। যে পর্য্যন্ত রামচন্দ্রের নিশিত শর-নিকর লঙ্কা নগরী আচ্ছন্ন করিয়া রাক্ষসৰ্বদের মস্তক ছেদন না করে ; হে রাজনৃ! তন্মধ্যেই সেই রঘুবরের জানকী রঘুবরকেই প্রত্যপর্ণ করা আপনার উচিত। যে পর্যান্ত পর্ব্বতাকার মহাবলশালী নখ-দংষ্ট্রা-যোধী বানরেন্দ্র, সদৃশ বানরগণ লঙ্কা আক্রমণ করিয়া আপনার সৈন্যদিগকে বিনাশ না করে,—তন্মধ্যেই সত্বর রঘুবরকে জানকী প্রত্যপণ করুন। নতুবা মুরশ্রেষ্ঠগণ বা সাক্ষাৎ মহাদেব, যদি আপনাকে রক্ষা করেন, অথবা আপনি যদি ইন্দ্র বা যমের ক্রোড়ে অবস্থান করেন, কিংবা রসাতলে প্রবেশ করেন, তথাপি জীবিত থাকিতে রামের হস্ত হইতে মুক্তি পাইতে পারিবেন না।" আসন্ন-মৃত্যু ব্যক্তি যেমন ঔষধ গ্রহণে পরামুখ হয়, সেইরূপখল রাবণ,—শুভ জনক হিতজনক এবং পবিত্র বিভীষণ-কথিত বাকা গ্রহণ করিতে পারিল না। প্রত্যুত সেই রাক্ষস কাল-প্রেরিত হইয়া বিভীষণকে বলিতে লাগিল ;– aআমি ইহার হিতকারী ; আমার প্রদত্ত ভোগে ইহার অঙ্গ পুষ্ট হইয়াছে ; আমার নিকটে অবস্থান করিতেছে; তথাপি এ কিনা আমারই প্রতিকূল আচরণ করিতেছে। অতএব আমি দেখিতেছি – সবংশে নিহত হইবে, বোধ হয়। তুমি না জানিয়া যদিও অনুচিত কার্য্য করিয়াছ ; তথাপি প্রভো! । প্রকৃত শত্রুই মিত্রবেশে উৎপন্ন, হইয়াছে; ইহাতে সন্দেহ নাই। এই অনার্য্য কৃতন্ত্রের সহিত সংসর্গ জ্ঞাতিগণ জ্ঞাতিগণের বিনাশই সর্ব্বদা কামনা করিয়া থাকে। অন্য কোন রাক্ষস যদি আমাকে এইরূপ কথা বলে,তাহা হইলে তাহাকে তৎক্ষণাৎ বধ করি ; তুই ভাই ;—তোকে আর কি বলিব ? তুই রাক্ষস কুলের অধম, তোকে ধিকৃ|” রাবণ, বিভীষণকে এইরূপ কঠোর বাক্য বলিলে মহাবল বিভীষণ গদা, হস্তে লইয়া স্বীয় মন্ত্রিচতুষ্টয়ের সহিত সভা মধ্য হইতে গগনতলে উত্থিত হইল। গগনতলে অবস্থিত হইয়া মহাক্রোধে দশকন্ধর রাবণকে বলিল ; “আমি প্রিয় বাক্যই বলিতেছিলাম ; আমাকেধিকার দিলে বটে; তথাপিতুমি জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা পিতৃতুল্য; তাই বলি বুদ্ধিদোষে বিনষ্ট হইও না।