পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লঙ্কাকাও তুমি, এই জগতে অগ্নিরূপী হইয়া প্রাণিগণের ভুক্ত নানাবিধ অন্ন পঞ্চবায়ুর সাহায্যে নিরস্তর পরিপাক করিতেছ; এইরূপে তুমি নিখিল জগৎপালন করিয়া থাক। হে ঈশ্বর । চন্দ্র স্বর্য্য ও অগ্নির অন্তর্গত তেজ নিখিল শরীরিগণের চৈতন্য এবং প্রাণিগণের শৌর্য্য, ধৈর্য্য ও আয়ু-তোমার সত্ত্বই এতৎ-সমস্ত রূপে পরিণত হয়। হে ঈশ্বর ! ভেদশূন্য একমাত্র নিশ্চিত ব্রহ্মই তুমি ; কিন্তু, তুমি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, কাল, কর্ম্ম, চন্দ্রও স্বর্য্যরূপ ভিন্ন ভিন্ন রূপে বাদীদিগের নিকট পৃথক্ বলিয়া প্রতিভাত হইয়া থাক। যেমন, নেদে, পুরাণে ও লোকে প্রসিদ্ধ আছে যে, একমাত্র তুমিই মংস্যাদি রূপ ধারণ করিয়াছ, সেইরূপ'সং ও অসং (ব্রহ্ম ও জগৎ) রূপে প্রতীয়মান একমাত্র তুমিই সমস্ত ; তোমা র্যতীত আর কিছুই প্রতিভাত হয় না। এই স্থাবর জঙ্গমাদি রূপ অনন্ত সৃষ্টিতে যাহা যাহ উৎপন্ন হইয়া গিয়াছে, যাহ উৎপন্ন হইবে ও যাহা বর্ত্তমান, তন্মধ্যে তোম। ব্যতীত কিছুই নয়ন গোচর হয় না; অতএব তুমি পরাৎপর। যেহেতু, জনগণ, তোমার মায়াদ্বার আবৃত, অতএব তাহারা পরমাত্মরূপী তোমার তত্ত্ব অবগত নহে । আর যাহার তোমার ভক্তবৃন্দের সেবা করিয়া নির্ম্মল চিত্ত, তাহারাই একমাত্র পরম ঈশ্বর-তত্ত্ব বুঝিতে পারে । বাহ বিষয়ে আসক্ত-চিত্ত ব্রহ্মাদি দেবগণও তোমার চিন্ময় আত্মতত্ত্ব অবগত নহেন। এইজন্য জ্ঞানীব্যক্তি, ! ভজনা | অনস্তর, শ্রীরাম, ব্রহ্মা ও রুদ্র প্রভৃতি সকলেরই ভক্তিসহকারে তোমার এইরূপেরই করিতে করিতে নিখিল-দুঃখ-শুন্য হইয়া মুক্তিলাভ করেন । আমি তোমার নাম কীর্ত্তন করত কৃতার্থ হইয়। ভবানীর সহিত নিরস্তর কাশীধামে বাস করি। আর তথায় মুমু ব্যক্তিকে মুক্তি দিবার জন্য তোমার রামনাম মন্ত্র প্রদান করি ; যাহারা নিত্য এই স্তব শ্রবণ গান বা লিপিবদ্ধ করিবে ; তাহারা যেন আপনার প্রসাদে সকল পরম সুখলাভ করিয়৷ ভবদীয় ধামে গমন করে । ১২৭ নিহত করিয়াছেন, অতএব আপনার প্রসাদে বহুপুর্বের ন্যায় আবার যজ্ঞভাগ আমাদিগের হইবে।” পিতৃগণ বলিলেন,—হে মহাত্মন ! মনুয্যেরা গয়াদি ক্ষেত্রে পিগুদি দান করিলে যে তুষ্ট দৈত্য আমাদিগের সকলকে আঘাত করিয়া কাড়িয়া লইয়া সবলে ভোজন করিত, আপনি সম্প্রতি তাহাকে বধ করিয়াছেন, এখন আমরা আবার সৃষ্টপুষ্ট হইব । যক্ষগণ কহিলেন –হে রাঘব । হে ঈশ্বর । এই দশাস্ত বলপুর্ব্বক আমাদিগকে অবৈতনিক দান্তে নিযুক্ত রাখিয়াছিল, দুঃখিত চিত্তে আমরা তাহাকে বহন করিতাম ; আপনি সেই কুরায়া রাবণকে বধ করিয়াছেন, আমরা এখন দুঃখজাল হইতে বিমুক্ত হইলাম । গন্ধর্ব্বগণ বললেন;--সঙ্গীতনিপুণ আমরা পূর্ব্বে আপনার অমৃত-গাথাগান করত নির্ভয় প্রমোদ-পীযুষে আক্রান্ত ও পরিতৃপ্ত ছিলাম। হে রাম! পশ্চাৎ রাবণ বল-পুর্ব্বক আমাদিগকে বশবর্ত্তী করিলে তাহার আরাধনায় তৎপর হইয়া তাহার চরিত্র-গান করত অবস্থিত ছিলাম, এক্ষণে আপনি সেই দুষ্ট রাক্ষসকে বধ করিয়া, আমাদিগকে পরিত্রাণ করিলেন । এইরূপ মহোরগগণ, সিদ্ধগণ, কিন্নরগণ, মরুদগণ, বায়ুগণ, মুনিগণ, গোগণ, গুহকগণ, পক্ষিগণ, প্রজাপতিগণ এবং অপরোগণ—সকলেই সেই নয়নানন্দকর রাম-সমীপে সমাগত হইয়া তাহাকে দর্শন করিলেন ও সকলেই পৃথকৃ পৃথক স্তব করিলেন ; বন্দনা করিলেন । তখন তাহারা আনন্দে ঐরামের প্রশংসা করত ও তদীয় চরিত্র গান করত স্ব স্ব ধামে গমন করিলেন। সকলেই অভিযেকান্দ্র সীতালক্ষ্মণ-সমন্বিত সিংহাসনে অবস্থিত অস্তুর্যামী রাজেন্দ্র রামকে ধ্যান করত গমন করিয়াছিলেন;– আকাশে বাদ্যধ্বনি হইতেছে, হৃষ্ট চিত্ত দেবগণ, স্বৰ্গ হইতে পুষ্প বৃষ্টি করত ঐরামের স্তব করিতে ইন্দ্র কছিলেন;–হে দেব। রাক্ষসরাজ রাবণ, ছেন,মুনিগণ চতুদিকে তদীয় স্তবকীর্ত্তনে নিরত,সীতা, ব্রহ্মার বর-প্রভাবে আমার নিখিল দেব-রাজ্য-রূপ সৌখ্য হরণ করিয়া লইয়াছিল । আঙ্গ শত্রু রাক্ষসকে নিহত করিয়াছেন ; এক্ষণে আপ লক্ষ্মণ, পবননন্দন, মুনিগণ ও বানগণ র্তাহার সেবায়ু ন সেই দুই নিযুক্ত। কোটি স্বর্য্য-প্রকাশ খামবর্ণ ঐরাম প্রসন্নভাবে বিরাজমান ; ঈষংহাস্যযোগে তদীয় বদন নার প্রসাদে তৎসমস্ত পুনঃ প্রাপ্ত হইয়াছি। মণ্ডল স্বন্দরতর হইয়াছে। * দেবগণ বলিলেন;–হে মুরারে! হে বিষ্ণো ! ! যে, জন্মান্তরে হিরণ্য কশিপু ছিল, সেই খল রাক্ষস, আমাদিগের উদেশে ব্রাহ্মণ-প্রদত্ত যজ্ঞ ভাগ সকল, হরণ করিয়া লইয়াছিল, সম্প্রতি আপনি, তাহাকে পঞ্চদশ অধ্যায় সমাপ্ত । মহাদেব মিজ হৃদয়ে সেইরূপ অবলোকন করুত উপস্থিত ঘটনার স্তায় ধর্ণন করিলেন অথবা ইরামের উক্ত প্রকার রূপ চিরস্থায়ী ।