পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ミbア ষোড়শ অধ্যায় । মহাদেব কহিলেন ;–সর্ব্বলোক-সুখাবহ রাজেন্দ্র রাম অভিষিক্ত হইলে, পৃথিবী শস্যশালিনী হইল ; বৃক্ষ সকল ফলবান হইল ; গঙ্গহান পুপসকল সুগন্ধি হইয়া প্রকাশিত হইল রঘুনন্দন রাম, অভিষিক্ত হইবার পুর্ব্বেই ব্রাহ্মণদিগকে শত সহস্ৰ অশ্ব ধেনু ও গাভী এবং শতশত বৃষদান করিয়াছিলেন । অভিষিক্ত হইবার পর আবার ব্রাহ্মণগণকে ত্রিংশং কোটি সুবর্ণদান করিলেন ; এবং সহর্যে ব্রাহ্মণদিগকে বসন, ভূষণ ও রত্ন প্রদান করিলেন। ভক্তবংসল রাঘব, স্বর্য্যসন্নিভ কাঞ্চনময়ী মালা প্রীতি সহকারে সুগ্রীবকে তার দিব্য কেয়ূর যুগল অঙ্গদকে প্রদান করিলেন রঘুকুলোত্তম রাম, কোটি-চন্দ্র-সন্নিভ মনিরত্ন-খচিত হার প্রতি সহকারে সূতাকে অর্পণ করিলেন। জনকনন্দিনী নিজ গলদেশ হইতে হাঃ খুলিয়া সকল বানরগণের দিকে ও ভর্ত্তার প্রতি মুহুমুহু দৃষ্টিপাত করিতে লাগিলেন। ইঙ্গিতভিজ্ঞ রাম, বৈদেহীকে দেখিয়া বলিলেন;–“হে সুবদনে । বৈদেহি! যাহার প্রতি তুমি সন্তুষ্ট হইয়াছ, তাহকে হার প্রদান করু", তখন সীতা রাঘবের সমক্ষেই হনমানুকে হার প্রদান করিলেন । পবননন্দন, সেই হার এবং সীতাকুত গৌরবে শোভিত হইল । রামও মারুতিকে পরমভক্তি সহকারে কৃতাঞ্জলিপুটে উপস্থিত হইতে দেখিয়া সন্তষ্ট ভাবে এই কথা বলিলেন –“হনুমন্‌ ! আমি তোমার প্রতি প্রময় হইয়াছি; অভিলষিতবর প্রার্থন কঃ ত্রিভুবনে দেবগণেরও যাহা দুল্লভ, তাহাও প্রদান করিব । হনুমানও শুষ্টচিত্তে রামকে প্রণাম করিয়া বলিল ;– “হে রাম আপনার নাম স্মরণ করিতে করিতে আমার মনের আশা মিটে না । অতএব সর্ব্বদা আপনf নাম স্মরণ করত ভূতলে থাকিব । জগতে যতদিন আপনার নাম থাকিবে ; ততদিন যেন, আমার দেহ থাকে ; হে রাজেন্দ্র, ইহাই আমার অভিলষিত বর " রাম, তাহাকে ‘তথাস্তু" বলিয়া বলিলেন – “এখন তুমি জীবন্মুক্ত,হইয়া অবস্থান কর; কল্পাবসানে তামার সাযুজ্য প্রাপ্ত হইবে,—এ বিষয়ে সন্দেহ নাই “ জানকী প্রীত হইয় তাহাকে বলিলেন;– “হে পবননন্দন! : মি যে কোন স্থানেই থাকন কেন আমরা আদেশে সকল প্রকার ভোগ্য বস্তু তোমার । অনুগত হইবে।” মহামতি পবন-নন্দন, সেই ঈশ্বর-ঈশ্বরী কর্তৃক এইরূপ উক্ত হইয়া হষ্টচিত্তে (1 তধাতু-রামায়ণ । আনন্দাশ্র-পূর্ণনয়নে তাহাদিগের উভয়কে বার বার প্রণাম করিল ;–অনস্তর তপস্যা করিবার জন্তু রামবিয়োগ দুঃখ অনুভব করত হিমালয় পর্ব্বতে গমন করিল। অনস্তররাম, কৃতাঞ্জলিপুটে অবস্থিত গুহের সমীপে আসিয়া বলিলেন ;—“সখে সর্ব্বোত্তম রমণীয় শৃঙ্গবের পুরে গমন কর। অনবরত আমাকেই চিত্ত৷ করত নিজোপার্জিত বিষয় ভোগ কর; তুমি অস্তে আমরাই সারূপ্য লাভ করবে, সন্দেহ নাই।" প্রভু এই কথা বলিয়া তাহাকে দিব্য অলঙ্কার ও বিপুল রাজ্য দান করিয়া বিজ্ঞানোপদেশ দিলেন । গুহ, রামকর্তৃক আলিঙ্গিত হইয়া হৃষ্টচিত্তে নিজভবনে গমন করিল। অন্যান্য যে সকল শ্রেষ্ঠ বানরগণ অযোধ্যানগরে আসিয়াছিল, রান্ধব, তাহাদিগের সকলকেই অমূল্য বসন ভূষণ দ্বারা সম্মানিত করিলেন। পরমাত্মা রাম, সুগ্রীবপ্রমুখ বানরবৃন্দকে ও বিভীষণকে যথোচিত রূপে সন্মানিত করিলেন ; তখন তাহার: সকলে যেখান হইতে আসিয়াছিল, স্পষ্টচিত্ত্বে সেই খানে চলিয়া গেল অর্থাং হুগ্রীবপ্রমুখ বানরগণ আনন্দে কিষ্কিন্ধ্যা গমন করিল । আর আনিন্দিত বিভীষণ নিষ্কণ্টক রাজ্য পাইয়াছিল; এখন প্রতিভরে রাম কর্তৃক পূজিত হইয়া লঙ্কানগরে গমন করল । এদিকে নিখিল লোক বৎসল রাখব, নিখিল রাজ্য শাসন করিতে লাগিলেন ; লক্ষণ অনিচ্ছুক হইলেও রাম তাহাকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করি লেন । লক্ষ্মণ পরম ভক্তিসহকারে রাম-সেম্বর নিযুক্ত রছিলেন। পরমানন্দময় রাম, যদিও পরমাত্মা কর্ম্মধ্যক্ষ, নির্ম্মল, কর্তৃত্বদিহীন, নির্ব্বিকাপ এবং সর্ব্বদা স্বীয় আনন্দে তুষ্ট; তথাপি লোক-শিক্ষার্থ মনুষ্য-দেহ ধারণপুর্ব্বক বিপুল দক্ষিণ দিয়া অশ্ব মেধ প্রভূতি যজ্ঞ করিলেন । রামচন্দ্র রাজ্য, শাসন করিতে থাকিলে বৈধব্য নিবন্ধন রমণীগণের বিলাপ করিতে হয় নাই ; হিংস্ৰজন্তুর ভয় ছিল না ; রোগ ভয় ছিল না ; লোকে দ্যুভয় ছিল না ; কোন অনিষ্ট হইত না এবং বৃদ্ধ জীবিত থাকিতে বালকগণের মৃত্যুভয় ছিল না। সকলে রাম-পূজা-পরায়ণ ছিল ;–সকলেই ঐরামের ধ্যান করিত। জলদজাল, যথাসময়ে প্রয়োজনমত বৃষ্টি করিত। প্রজাগণ, বর্ণ ও আশ্রম গুণে অম্বিত এবং স্বধর্ম্মে নিরত ছিল। রাম ও পিতার দ্যায়, সর্ব্বলক্ষণান্বিত সর্ব্বধর্ম্মপরায়ণ । প্রজাগণকে ঔরস-পুত্রবৎ পালন করিতে লাগিলেন। রাম দশ সহস্ৰ বৎসর রাজ্য শাসন করিলেন। পূর্ব্বকালে আদি শস্তু এই পবিত্র অধ্যাত্ম রামায়ণ ব্যক্ত