পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

: a অধ্যাপক সুজাতা দোল খেতে খেতে বল্লে—“চমৎকার । ভারি মজা লাগছে । অনেকদিন এমনটি হয় নি । তোমার মনে আছে, রাওলপিণ্ডিতে তোমাদের বাগানে কেমন এমনি দোল খেতুম ? তুমি পিছন থেকে দোল দিয়ে দিতে ?” মুকুমার বল্লে—“খুব মনে আছে । তখন তুই পরতিস্ ফ্রক, এখন হয়েছিস ‘লেডি’ । পশ্চিম দিক থেকে সোনালি আলো এসে তোর কোকড়া চুলে ঝকমক করছে, তার আভা পড়েছে তোর মুখে । তার সঙ্গে মানান দিয়েছে তোর স্বর্য্যমুখী রঙের ওড়নাটা । মনে হচ্ছে যেন কোন দেবী এসে বুঝি সিংহাসনে বসলেন । সে তুমি আর এ তুমি ঢের তফাং ” “দেখ, অমনি করে’ তুমি বলবে না, আমার ভারি লজ্জা করে।” এতক্ষণ মুজাতা আস্তে আস্তে দোল খাচ্ছিল । এখন স্বকুমারের মুখ বন্ধ করবার জন্যে দোলনার উপর দাড়িয়ে উঠে খুব জোরে জোরে দোল খেতে লাগল। দোলনাটা এক একবার যেন একেবারে উপরের দিকে খাড়া হতে চায়, আবার নেমে আসে । স্বকুমার ব্যস্ত হয়ে বল্লে--"ওরে অত জোরে নয়, অত জোরে নয় । শেষকালে তাল সামলাতে পারবি না ।” কিন্তু কে শোনে কার কথা ? স্বকুমার যত ব্যস্ত হয় স্ব স্থাতা তত খিলখিল করে হাসে আর আরও জোরে দোল দেয়। স্বজাতা যত এ রকম করে তত স্বকুমার অসহায় উদ্বিগ্নতার সহিত তার দিকে স্থির হয়ে চেয়ে থাকে । ঠিক এই মুহূর্তে হঠাৎ সুজাতার পা গেল দোলন থেকে ফসকে"। হাত দিয়ে সে চেষ্টা করলে দড়ি ধরে ঝুলে’ থাকতে, পারলে না। ছিটুকে এল সামনের দিকে । সেই নিমেষে স্বকুমার দুই বাহু প্রসারণ করে অবলীলাক্রমে নিলে তাকে লুফে ।