পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१8 7 অধ্যাপক আছে নীহারিকার ওড়ন। সে নীহারিকার স্রোতে, বিলাসবিভঙ্গে, ফেনপুঞ্জের চটুলতায় মনকে সে যে নেয় ভাসিয়ে, পায়ের তলা থেকে মাটি যায় সরে ; শরীর ছুটুতে থাকে শূন্যের মধ্য দিয়ে, শুধু টের পাওয়৷ যায় একটা আবেগের ঘূর্ণর—এই ঘূণীর মধ্যে যখন পড়া যায়, তখন কুলে ফিরবার ইচ্ছা থাকলেও, থাকে না সামর্থ্য, বীর্য্য যায় বিলুপ্ত হয়ে ; তবু ভাল লাগে এই ঘূর্ণীতে ঘুরপাক খেতে খেতে তলহীন সাগরের বক্ষে ছুটে যেতে । প্রভার ব্যাপ্তি নেই সুজাতার মত, তবু মুজাতার যেমন একটা দূরের গভীরতা নিরন্তর পৃথক করে রাখত স্বকুমারকে তার অতিসন্নিধি থেকে, প্রভার মধ্যে তা নেই। প্রভার মধ্যে আছে একটি সহজ নৈকট্য, তার মধ্যে যেন কোনও হেঁয়ালি নেই, শুধু একটি স্বচ্ছ দীপশিখা । সে দীপশিখা বরণডালার দীপ, তা হলঘর আলোকিত করবার বিপুল আলো নয়। তাকে কপালের কাছে আনলে তার মৃদু উত্তাপটুকু সহ করা যায়, কারণ তার আলোও যেমন মৃদু, তার দাহিকা শক্তিও তেমনই অল্প । প্রভা আবার জিজ্ঞাসা করলে—“আপনি এমন থমকে গেলেন কেন ? আমার ত মনে হয় না স্থজাতাকে তার ক্লেশ দিতে পারবে । ও রকম মেয়ে যেখানে যাবে সেখানেই সে দখল করে নেবে নির্বাধায় তার মহত্ত্বের আসন । তার ঘাড়ে ওরা যতই অপরাধের বোঝা চাপাকু না কেন, সে তথাপি যাবে সকলের মাথার উপর দিয়ে, ছাড়বে ন। তার উপস্থিতিতে সকলকে আনন্দ দিতে, প্রভাবিত করতে সকলকে আপন পবিত্রতার দ্বারা । কলম্বী বলে চাদের অপবাদ আছে, তবু সে কি সকলের মাথার উপর দিয়ে সর্ব্বদা ভ্রমণ করে না, হরচূড়ামণিতে কি তার আসন নেই ? স্বজাত হ’ল সেই মেয়ে, যাকে অস্বীকার করলেও অস্বীকার করা যায় না। ওর জন্য কিছু দুঃখ করবেন না আপনি ।”