পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&bro অধ্যাপক মঞ্জরীকে সে কিছুমাত্র জানাল না প্রভার কথা। প্রভার সঙ্গে তার ঘটুল একটি স্নিগ্ধ বন্ধুতা, সেটুকু যেন হ’ল তার তপ্ত মনের পক্ষে সঞ্জীবনী, হৃদয়ের একটু বিশ্রামস্থল, কিন্তু তার বেশী আর কিছু নয়, কারণ ক্ষুধিত মনের খোরাক জোগাবার মত উত্তেজক সামগ্রী ছিল না প্রভার । এই মেয়েকে নিয়ে স্বচ্ছন্দে গৃহধর্ম্ম পালন করা যায় স্থথে ও শাস্তিতে, কিন্তু প্রেমের আবর্তে হাবুডুবু খাওয়া চলে না। বিশ্রাম ও শাস্তির দ্বারা চিত্তকে অমুদ্বিগ্ন করে দুগ্ধের মত স্বাস্থ্য বিতরণ করবার ক্ষমতা প্রভার ছিল, কিন্তু উগ্র নেশা জাগাবার মাদকতা তার ছিল না। অনেক পুরুষ আছে যাদের হৃদয়ের মধ্যে থাকে স্বপ্ত হয়ে এক একজন সেকেন্দার শা। তারা তেমন ভোগলিঙ্গ, নয় যেমন বিজিগীষু । সেকেন্দার শা’র যেমন দেশের পর দেশ জয় করে’ও বিজয়লিপার শেষ ঘটে নি তেমনি এই সমস্ত পুরুষেরও মনে নব নব নারীহদয়ের উপর অধিকার বিস্তার করার একটা স্বাভাবিক লোভ থাকে । তাদের গৃধ্ৰ, চিত্ত সেইজন্য নূতন নারীর সন্নিধিতে এলেই জাল পাতে তাদের বদ্ধ করবার জন্য, কিংবা পুষ্পশরাসন থেকে মুক্ত করতে চায় চুতকলিকার বাণ তাকে বিদ্ধ করবার জন্য । কিন্তু মুকুমার এ জাতীয় লোক ছিল না । নারী দ্বারা সে আকৃষ্ট হতে পারত কিন্তু নারীকে আকর্ষণ করবার জন্য সে তৎপর হয়ে উঠতে পারত না । নারী সম্বন্ধে সে অনেকটা ছিল passive । কাজেই তার বিপদ ছিল সেইখানে যেখানে সে এমন নারীর সন্নিধিতে এসে পড়েছে যে আপন ঘূর্ণাবর্তে তাকে টেনে নিয়ে যাবে। সুকুমারের মন যাই বলুক না কেন, তেমন অবস্থায় আত্মরক্ষা করা তার দুঃসাধ্য। সে বিপদ ঘটেছিল তার মঞ্জরীকে নিয়ে । প্রভা সম্বন্ধে সে ছিল নিরাপদ । প্রভা সম্বন্ধে তার হৃদয় নরম হতে পারত, কিন্তু তরল হয়ে প্রবাহিত হতে পারত