পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミbペ অধ্যাপক এল সেই ঋতু যখন ভ্রমরের পাগল হয়ে ওঠে পুষ্পরন্ধে প্রবেশ করে’ মধুপানের জন্য, যখন আতাম্র-হরিতপাণ্ডুর কিশলয়দলে সমাচ্ছন্ন হয় বনস্পতিকুঞ্জ ; অশোকবন আচ্ছন্ন করে জলন্ত অঙ্গারকণা, কণিকার বীথিতে ছড়িয়ে পড়ে পাবকের উম্মিশিখা, শ্বেতহংসের স্তায় মন্দ বায়ুতে আন্দোলিত হয়ে ওঠে গন্ধরাজ, সবুজ পত্রাবলিকে আবৃত করে’ দেয় তার সুধাশুভ্র ধবলতা, প্রসারিত আমোদে স্তব্ধ সোৎসুকনেত্র চলন্ত পথিকের গতি হয় রুদ্ধ । হরিত পত্রাচ্ছাদনের মধ্য দিয়ে দূরশীর্ষে দেখা দিয়েছে হেমাঙ্গ চম্পক, লুব্ধ পথিক হতাশ হয়ে সেদিকে তাকিয়ে দেখছে । সে ফুল তার নাগালের বাইরে, সে ঝরে না, তাকে তুলে নিতে হয়। মাধবী আলিঙ্গন করেছে সহকারকে তার সহস্ৰ লতাশাখার দ্বারা, পুষ্পিত হয়ে উঠেছে তার নবযৌবন বিলুদ্ধ করতে তার স্বগন্ধে সহকারকে, আর তারই উদ্ধৃত্ত অংশ উড়ে যাচ্ছে বাতাসে আর সেই সুগন্ধে স্বপ্নাঙ্কিত করে দিচ্ছে পথিকের মন মোহের বাসনায় । পারাবতবধু কুজনমত্ত হয়ে চঞ্চুতে চঞ্চুতে স্পর্শ করছে আপন সহচরকে । বিলুপ্তপত্র কৃষ্ণচূড়া লাল চেলিতে সমস্ত গাত্র আবুত করে স্মবণ করিয়ে দিচ্ছে অনাদিকালের বধূস্বয়ংবর। প্রলুব্ধ ভ্রমর পরাগপিশঙ্গ হয়ে পথ হারিয়েছে ঈষন্মুকুলিত পদ্মিনীর পত্রদলের গোলকধাঁধার মধ্যে । চতমুকুলের গন্ধে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে মধুপশ্রেণী । পুষ্পধনু যেন আজ র্তার পঞ্চবাণকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন সমগ্র ধরাতলে মিথুনম্বদয়কে বিদ্ধ করবার জন্য। পরাগ-রজঃপূর্ণ হয়েছেন পৃথিবী । এমনি একটি বসন্তঋতুর অপরাহ্নে চাদপাল ঘাটের একটি ষ্টীমারে প্রথম শ্রেণীতে পাশাপাশি বসে মঞ্জরী ও মুকুমার। ষ্টীমার চলেছে রাজগঞ্জ ঘাটের দিকে। প্রথম শ্রেণীতে আর লোক নেই । ক্ষীণতোয়। ভাগীরথীর বক্ষে অতিকায় ষ্টীমারখানি জলরাশি আলোড়ন করতে