পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8〉br অধ্যাপক কানাই বিস্ময়ে ই হয়ে গেল । সুজাতা অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে কথা শুনছিল। জিজ্ঞাসা করল—“বলুন ত আমি কি করি।” কর্ম্মচারীটি বললে—“আপনি কাজ করেন অন্য পথে, সে বিষয়ে আমাদের বিশেষ কৌতুহল নেই। আপনি রাশি রাশি অঙ্ক কষেন, তা আমরা কিছু বুঝি না, আর করেন পরমাণু নিয়ে গবেষণা। ওটা স্থল হয়ে না দাড়ালে আমাদের উৎসাহের বাইরে । বিশুদ্ধ বৈজ্ঞানিক চর্চা যতক্ষণ পর্য্যন্ত যন্ত্রে পরিণত না হয় ততক্ষণ পর্য্যন্ত কোনও ইষ্টানিষ্ট করতে অক্ষম ।’’ সুজাতা আবার জিজ্ঞাসা করলে—“কি উপায়ে আপনার এসক জানেন ?” কর্ম্মচারীটি হেসে বললে—“সকল উপাখ্যানেরই এক জায়গায় দাড়ি টানতে হয় । আমাদের এ বিষয়ের আলোচনা এইখানেই হোক শেষ ।” বলে সে কাগজপত্র গুটিয়ে নিয়ে উঠে দাড়াল । বললে— “আপনাদের বিশ্রাম ভঙ্গ করলুম বলে অত্যন্ত দুঃখিত। আর যে কোলাহল তুলে গেলুম তাতে রাত্রিতেও বিশ্রাম পান কিনা সন্দেহ । আমি আর আপনাদের বিরক্ত করতে চাই না।” এই কথা বলে পুলিশ কর্ম্মচারীটি আবার হেসে বললে—“আর যে কাজের জন্য আপনার বরিশাল যাচ্ছেন সে কাজে আপনার সফল হন এই শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করি।” এই কথা বলে দু’হাত তুলে একটি নমস্কার করে তাদের মুখের দিকে একটি সম্মিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কর্ম্মচারীটি আস্তে আস্তে সেখান থেকে উঠে গেল । দুজনে বিস্ময়ে তার দিকে চেয়ে রইল । চারিদিক নিস্তব্ধ । সন্ধ্যার অন্ধকার তখন গাঢ় হয়ে এসেছে । ছপ্‌ ছপ্‌ শব্দ করে ষ্টিমারখানা চলেছে নদীর জল আলোড়ন করে । অনতিপ্রশস্ত নদী, দু’পাশের ঝোপঝাপ সমস্ত রয়েছে গভীর কালো হয়ে ।