পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86 & অধ্যাপক সুকুমার নীরব হয়ে থাকত। ভাবত—কথাটা ত মিথ্যা নয়, প্রভাই ত সব করেছে তার জন্য, সুজাতা ত বড় একটা এদিকে আসেই না । রোগী টের পায় রোগীর ঘরের সেবা । সেই ঘরে যে থাকে একান্ত আসন্ন হয়ে, তারই প্রতি পড়ে তার দৃষ্টি, তারই প্রতি হয় তার কৃতজ্ঞতা। যে ব্যবস্থায় বা যার ব্যবস্থায় সে সেবা সম্ভব হয়ে ওঠে তার সম্বন্ধে তার কিছুই জ্ঞান থাকে না । কল্পনা থাকে তার দুর্বল, অনুমান শক্তি থাকে ক্ষীণ, তাই ঘরের বাইরের যে আয়োজন ঘরের ভিতরের আয়োজনকে সার্থক করে তোলে, সে সম্বন্ধে সে থাকে অনেকটা অচেতন ও উদাসীন । এরও কিছুদিন পরে এল আর একখানা চিঠি যাতে লেখা ছিল যে অধ্যাপকের মন বড় বিমর্ষ, তার শরীরও ভাল নেই। মায়ের আসন নড়ল । সুজাতা ভাবলে—আর ত থাকা যায় না । ইতিমধ্যে প্রভা একদিন রঞ্জনকে নিয়ে তার একজন দূরসম্পৰ্কীয় আত্মীয়ের বাড়ী বেড়াতে গেল । বাড়ীতে রইল স্বজাত । সুজাত প্রায়ই এরকম একটা অবস্থা ঘটতে দিত না, কারণ সে অনুভব করেছিল যে সুকুমার তাকে চায় । সে কথা মনে করতে তার সর্বশরীর ক্লিন্ন ও বিষাক্ত মনে হ’ত । সুকুমার যখন অস্থস্থ, তখন তাকে সে কোনও কথা বলে’ পীড়া দিতে চায় নি । কিন্তু এখন মুকুমার বেশ মুস্থ হয়ে উঠেছে । মুজাতা এর মধ্যে অনেকবার কলকাতায় ফেরবার কথা বলেছে, কিন্তু মুকুমার একেবারে কান্নাকাটি বাধিয়ে দিয়েছে । আর প্রভাও যেতে চায় নি। স্বজাতার মনে হ’ল, আজ একটা বোঝাপড়ার দিন । স্বকুমার বার বার ডেকে পাঠাতে লাগল স্বজাতাকে স্বজাত গিয়ে একখানা চেয়ার নিয়ে বসলে স্বকুমারের শয্যা থেকে থানিকটা দুয়ে ।