পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৫২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ( » °ል அர்ன் দু'টি ভক্তের সাধনার দু’টি সমান্তরাল ধারা ছুটে চলল তাদের সিদ্ধির সাগরসঙ্গমের দিকে । সুজাতা ও কানাইয়ের প্রেম গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়েছে, কিন্তু কোন ভাষায় পায় নি তা প্রকাশ। তা প্রকাশ পেয়েছে তাদের পরম্পরের ব্যবহারে । উভয়ের স্থিতি একান্ত ভাবে হয়ে উঠেছিল পরস্পর সাপেক্ষ, পরস্পরের সত্তা যেন নিমগ্ন হয়ে আসছিল পরস্পরের মধ্যে । একটি বসন্তসন্ধ্যায়, যখন উদ্যানের দিম্বিভাগ আলোকিত করেছিল পুঞ্জীকৃত সন্ধ্যামণি ফুলে, দিনের মৌনতপস্যায় সন্ধ্যার রজনীগন্ধার হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে সমুদগত হচ্ছিল গন্ধের আভাস, নবমল্লিকা ও হেনার পেলব পুষ্পদল থেকে সৌরভের স্রোত আসছিল বয়ে, ভূরি ভূরি চুতমুকুলের পরিপুষ্ট গন্ধ দুর্ব্বহ হয়ে উঠছিল পবনের পৃষ্ঠে, বকুলবীথিকার পাদমূল আস্তরিত হয়েছিল রাশি রাশি বকুল পুঞ্জে, মাধবী ছেড়েছিল তার গন্ধের বাণ কোন অলক্ষিত পত্রপুঞ্জের অন্তরাল থেকে, দক্ষিণের শীতস্বরভিত পবন মন্দপ্রবাহে গুঞ্জরিত হচ্ছিল কিশলয়কুলের মধ্যে অস্ত:সঞ্চারে, পরিণামরমণীয় দিনের প্রান্তে স্নিগ্ধ হয়ে উঠছিল সেই বাতাসে নরনারীর শরীর, জ্যোৎস্নাধবলিত গন্ধরাজ উৎফুল্ল হয়ে দোল থাচ্ছিল পবনে, আলিপুঞ্জ হয়েছিল বন্দীকৃত উদ্যানসরোবরের বনলক্ষ্মীর পত্রাঞ্চলের মধ্যে, মৃদুরপ্রসারী মাঠের প্রান্তে পল্পীভবনে দীপশিখার যুদ্ধ আলোক হচ্ছিল ঈষৎ আকম্পিত, স্থচিত করছিল, সমস্ত পল্পীভবনের গার্হস্থ্য সম্পদ, বনশার্থীদের পত্রপুঞ্জের মধ্যে রাশি রাশি জোনাকীর। হয়েছিল পথভ্রষ্ট, অৰ্দ্ধস্বপ্ত হয়েছিল বিহঙ্গমকুল নীড়ের মধ্যে, পূর্ব্বদিগ্বিভাগ আলোকিত করে সমীপবর্ত্তী চিত্রনিক্ষত্রের দিকে ধাবিত হচ্ছিল ত্রয়োদশীর চন্দ্র,—এমনি এক সন্ধ্যায় সপ্তপীর এক বৃহৎ বেদিকার উপরে দু’খানি কুশাসনে বসে ছিল কানাই ও মুজাত ।