পাতা:অনুবর্তন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসুবর্তন SRt মালগুদামের ও পার্শেল আপিসের পেছনে দাদার কোয়াটারে গিয়া ডাক দিলেন -ও বৌদি ! -এসে এসে ঠাকুরপো । মনে পড়লো এতদিন পরে ? তা ভাল আছে বেশ ? আমায় শশীবাবুর বৌ রোজই বলেন, হ্যা দিদি, তোমার সে ঠাকুরপো কবে আসবেন ? আমি বলি, তা কি করে জানবো । কলেজে কাজ করেন, বড় চাকরী, ছুটি না হোলে তো আসতে পারেন না। তা ছেলেমেয়েদের কোথায় রেখে এলে ? -ওরা তাদের পিসীমার কাছে রইল কালীঘাটে-মেজদিদির কাছে। --বেশ, এসেছি, ভালই হয়েছে। এবার একটা ঘা হয় ঠিক করে ফেলো। ওঁদের মেয়ে বড় হয়েছে, তোমার ভরসাতেই আছে । আর তোমাকে সংসার যখন করতেই হবে।--তখন আর দেরি করা কেন, আমি বলি । বোসো, হাত পা ধোও, চা করি। ক্ষেত্রবাবু এইরূপ একটা অস্পষ্ট আশার গুঞ্জনধ্বনি। সারাদিন ট্রেণের মধ্যে কানের কাছে শুনিয়াছেন-চলমান বাতাসে সে আভাস আসিয়াছিল । বাসায় পা দিতে এমন কথা শুনিবেন, তাহা কিন্তু ভাবেন নাই । ক্ষেত্রবাবু পুলকিত হইয়া উঠিলেন । তাহার জ্যাঠতুতো দাদা গোবৰ্দ্ধনবাৰু সন্ধ্যার সময় ডিউটি হইতে ফিরিয়া বলিলেন-এই যে, ক্ষেত্র কখন এলে ? চা খেয়েছ ? স্কুল কবে, কাল বন্ধ হোল ? বেশ । গোবৰ্দ্ধনবাবু পাকা লোক। যে খুড়তুতো ভাই আজ সাত আট বছরের মধ্যে কখনো ঘনিষ্ঠত করা দূরের কথা, বছরে দুখানি পোষ্টকার্ডের পত্র দিয়া খোজ-খবর লইত কি না সন্দেহ, সেই ভাই কাল স্কুল বন্ধ হইতে না হইতে কলিকাতা হইতে বৰ্দ্ধমানে আসিয়া হাজির, এ নিশ্চয়ই নিছক ভ্রাতৃপ্রেম নয়। গোবৰ্দ্ধনবাবু মনে মনে হাসিলেন। চা জলখাবার পর্বাস্তে ক্ষেত্রবাবু তাহারই সমবয়সী শ্রীগোপাল মজুমদার