বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অনুসন্ধান - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অনুসন্ধান

অন্য কারো গাছ থেকে চুরি করে এনেচে। আমাদের নিজেদের গাছ নেই—কেই বা দেবে অসময়ে? বলি শোনো, চুরির জিনিস আমার পেটে সইবে না। আমার সংসারে কেউ খাবে না। ফেলে দাও সবটুকু ৷

মনোরমা অনেক যত্ন করে দরিদ্র সংসারে অসময়ের এঁচড় রেঁধেছিলেন। স্বামী খেতে ভালোবাসেন বলে তাঁর অত আগ্রহ। এই আগ্রহের জিনিসটা নির্মম ভাবে ফেলে দিতে তাঁর চোখে জল এল। কিন্তু কিছু বলতে পারলেন না মুখে। তিনি তাঁর স্বামীকে খুব ভাল ভাবেই চেনেন। অনুনয় বিনয়ে এক্ষেত্রে কোনো ফল হবে না। অভিমান করে চুপ করে রইলেন।

মনোরমাকে বুঝিয়ে বললেন নারাণ মাস্টার। দেখো, ছেলেকে শুধু উপদেশ দিলে কাজ হবে না। “আপনি আচরি ধর্ম পরকে শিখাই”—আমরা পিতামাতা, এই আমাদের জীবনের মূলমন্ত্র হওয়া দরকার। মুখে বলি, অথচ চুরির এঁচড় রেঁধে খাই—এতে ছেলেপিলে ভালো উপদেশ কখনো নেবে না। আমি জানি তোমার মনে কষ্ট হয়েচে, কিন্তু আমি যে পিতা, তুমি যে মা—আমরা যে শিক্ষক!

১৯