পাতা:অন্ধকারের জানালা - বিদ্যুৎ মৈত্র.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই সংকলনের কয়েকটি কবিতা সেকালের এবং কয়েকটি একালের, অর্থাৎ ইং বিংশ শতাব্দীর বিগত তিনটি দশকের বিচ্ছিন্ন সময়ের মধ্যে এ কবিতাগুলির জন্মকাল—সেটা মনস্বী কাব্যামোদীর দৃষ্টি এড়াবে না। চল্লিশ বা পঞ্চাশ দশকের কবিতা—যাদের পোষাকে আধুনিক ছাদের ছাট-কাটের বালাই-ই নেই, ষাট দশকের আধুনিক কাব্য পাঠক সম্প্রদায়ের কাছে পেশ করবার কোনো অর্থ আছে কি ? — এ প্রশ্ন র্যার আমার সামনে রাখবেন, তাদের আমি সবিনয়ে জানাবো যে, আমি কোনোদিনই কবিতার আধুনিক রচয়িতা ও আধুনিক পাঠকের গোষ্ঠীবন্ধনে বিশ্বাসী নই। কবিতার অনুপ্রেরণা ও অনুসরণ-অনুভাবনা কখনোই পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট মেনে চলে না-কার্তিক মাসে বার্তাকু ভক্ষণ নিষিদ্ধ, এ অনুশাসন মানে না। সেকালের কবিতা একালের কাব্যামোদীর ভাল-লাগা, না-লাগা, কালের হুকুমজারির অপেক্ষা করে না। কাজেই, ইংরেজ কবি চসার বা ডান, কিংবা বাঙালী কবি ভারতচন্দ্র বা বিহারী লালের কবিতা একালে কারোই ভাল লাগবে না, এ রকম অনুমানের কোনো কারণ নেই। বিভিন্ন কালে কবিতার পরিমার্জনে বহিরঙ্গের চাকচিক্যের ইতর বিশেষ চোখে পড়লেও, প্রচ্ছদের অন্তরালে কবিতার স্মৃষ্টি মূলটি সেই একই রয়েছে-সেই মূলের রসে সঞ্জীবিত হয়েই কাব্যভাবনার ডাল-পালা বিস্তৃত কালের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ কোনো ডালের পত্র-পুষ্পের সজ্জা-বৈচিত্র্যে কেউ যদি কিছু বেশী উৎসুক হন, তাকে নিবারণ করবার একমাত্র কারণ যে কবিতার পাণ্ডুলিপির ধূসর, এ মানতে আমার মন কোনোদিনই রাজী নয়। হয়তো কারে কাব্য-উৎসুক মন বার্লিন ওয়াল ডিঙতে পারে, এই আশায় বর্তমান বহুরূপী গ্রন্থনাটি পেশ করলাম। আর সবচেয়ে বড় কথা, কবিতাগুলি আমার লেখা’—সেখানে সম্পূর্ণ মোহমুক্ত হওয়া যে-কোনো লেখকের পক্ষেই কঠিন । ইতি—