তৃতীয় পরিচ্ছেদ যে ভয়াবহ মৃত্যু আছে তাহা আমি ভালরূপেই বুঝিলাম"••••••••প্রহরিগণের মধ্যে একজন জমাদারকে দেখিয়া মনে হইল যে, সে একাই আমাদের দুঃখে কিছু দু খিত হইয়াছে এবং তাহার হৃদয়েই মাত্র মনুষ্যত্বের চিহ্ন পরিলক্ষিত হইল। আমি তাহাকে নিকটে ডাকিয়া ২০০০ সহস্র টাকা দিতে অঙ্গীকার করিয়া নবাবের নিকট আমাদের আসন্ন বিপদের কথা জানাইতে বলিলাম••••••সে ফিরিয়া আসিয়া বলিল যে, নবাবের হুকুম ব্যতিরেকে কিছু হইবে না এবং নবাবকে জাগাইতেও কেহ সাহস করিল না। এই অবসরে বন্দিগণের উগ্রস্বভাব কিছু ন হইলে আমাদের অসুস্থতা বাড়িয়া উঠিল ; কয়েক মিনিট বন্দী থাকিয়াই সকলের এরূপ ঘর্ম্ম হইতে লাগিল যে, আপনি তাহার কোন ধারণা করিতেই পারেন । রাত্রি ৯টার পূর্বেই সকলের পিপাসা অসহ্ন হইয়া উঠিল এবং স্বাসপ্রশ্বাসও বন্ধ হইবার উপক্রম হইল•••••••এবং প্রত্যেক ব্যক্তিই ক্ষিপ্র হইয়া প্রলাপ বকিতে লাগিল। “জল, জল বলিয়া সকলে চীকার আরম্ভ করিল•••••এবং সেই বৃদ্ধ জমাদারটা কয়েক মশক জল আনিলে তাহা হাটের মধ্যে করিয়া জানালার লৌহশলাকার মধ্য দিয়া ঘরে প্রবেশ করান হইল••••••অন্ধকূপের মধ্যে ৬ ফুট প্রশস্ত একটী প্লাটফরম অন্ধকূপের পূর্বদিকে অবস্থিত ছিল •••••••ইহা জানালার ঠিক বিপরীত দিকে ছিল.•••••• মুহূর্ত মধ্যে আমার ব্যথা, হৃদকম্প ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কষ্ট দূরীভূত হইল, কিন্তু আমার তৃষ্ণা অসহ্য হইয়া উঠিল, আমি চীৎকার করিয়া বলিলাম “খােদার দোহাই, জল দাও’•••••তৎপর আমার দেহনিস্ত ঘর্মসিক্ত সার্টের আস্তিনে মুখ ভিজাইতে লাগিলাম। আমার ঠিক পশ্চাতেই কেরি (Carey) নামে একজন কর্মচারী ছিল।•••••• ইহা ( অন্ধকূপ) হইতে জীবিত জনৈক ব্যক্তি লিখিত এই বিপদের কাহিনী পড়িয়া আমার মনে হইল যে, তাহাদের কিছু মাত্র সংজ্ঞা ছিল না। - T
পাতা:অন্ধকূপ-হত্যা-রহস্য - মুজিবর রহমান.pdf/২৭
অবয়ব