“অন্ধকূপ-হত্যা-রহস্য এই সময়ের মধ্যেও তাহাদের আর ঘটনাটীর বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া সময় জুটিল না এবং তাহাদের আত্মীয় স্বজনের মধ্যে ১২৩ জন লােক অন্ধকূপে শ্বাসরুদ্ধ হইয়া প্রাণত্যাগ করিল অথচ এ পত্রে সে কথার কোনই উল্লেখ করিলেন না—কারণ কি? ইহার প্রধান কারণ হইতেছে তাহাদের সহকর্মিগণ কে কোথায় গিয়াছেন তাহার কোনই ঠিক নাই। বন্দী হইয়া কেহ মুর্শিদাবাদ গিয়াছেন, কেহ চন্দননগরে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছেন, কেহ বা ফলতায় আছেন। এমতাবস্থায় কাউন্সিলারগণ কি লিখিতে হইবে কিছু ঠিক করিতে না পারিয়া এরূপভাবে পত্র লিখিতেছেন; কিন্তু অন্ধকূপহত্যা প্রকৃতপক্ষে ঘটিয়া থাকিলে তাহারা নিশ্চয় উল্লেখ করিতেন। তাহারা সকলের প্রতীক্ষা করিতেছেন যে, সকলে একত্র হইলে আত্মরক্ষার নিমিত্ত একটা কিছু রিপাের্ট দেওয়া যাইবে; কারণ এ বিষয়ে সকলেই সংশ্লিষ্ট। (খ) ফল কাউন্সিল ইহার পর ১৮ই আগষ্ট তারিখে মাদ্রাজে ২য় পত্র প্রেরণ করিতেছেন। যে হলওয়েল, ড্রেক, ওয়াট, কোলেট প্রভৃতি ব্যক্তিগণ অন্ধকূপের বিষয়ে লম্বাচওড়া উপাখ্যান লিখিয়া গেলেন এবং এই উপাখ্যান লিখিয়া প্রায় মাসখানেক পরেই উক্ত পত্রে স্বাক্ষর করিতেছেন কিন্তু তখন সকলেই নির্বাক। এইরূপ নিৰ্বাক হইবারই কথা ; একটা মিথ্যা কথা নিজের বন্ধুবান্ধবের নিকট যেরূপভাবে লিপিবদ্ধ করা যায়, একটা সভাগৃহে তাহা অত সহজে হয় না। এই জন্যই তাহার নীরব। | (২) যাহা হউক কলিকাতার ইংরাজগণ মাদ্রাজের সহিত পত্র আদানপ্রদানে এরূপভাবে নীরব রহিলেন, এখন আমরা দেখি ইংলণ্ডে লিখিত পত্রে তাহারা কি লিখেন। কলিকাতা পতনের পর ১৭ই সেপ্টেম্বর তারিখে (১৭৫৬) ইংলণ্ডের কোর্ট অব ডিরেক্টরএর নিকট ফল কাউন্সিল প্রথম পত্র লিখেন। দুর্গ অবরােধের বিষয় তাহারা তাহাদের পত্রে লিখেন ৫৮
পাতা:অন্ধকূপ-হত্যা-রহস্য - মুজিবর রহমান.pdf/৬৬
অবয়ব