. . । “অন্ধকুপ-হত্যারহস্য প্রথম পরিচ্ছেদ ভারতে ব্রিটীশ রাজত্বের প্রারম্ভকাল হইতে আজ পর্যন্ত ব্রিটাশ ভারতের স্কুল পাঠশালার কচি ছেলে-মেয়েদের জন্য যে সকল স্কুলপাঠ্য ভারত ইতিহাস রচিত হইয়াছে তাহার প্রত্যেকখানিতে লিখিত আছে যে, ১৭৫৬ খৃষ্টাব্দে জুনমাসে নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা কলিকাতা নগরী অধিকার করিয়া ১৪৬ জন ইংরাজকে ১৮ বর্গফুট পরিমিত একটী ক্ষুদ্র কক্ষে সমস্ত রাত্রি বন্দী করিয়া রাখেন; ইহাতে তাহাদের মধ্যে ১২৩ জনের শ্বাসরুদ্ধ হইয়া মৃত্যু ঘটে। ভারত ইতিহাসে এই রূপ নির্মম অত্যাচারের দৃষ্টান্ত আর দৃষ্ট হয় না, ইত্যাদি। কোন কোন ঐতিহাসিক অনুগ্রহপূর্বক বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব (১) সিরাজউদ্দৌল্লাকে এই ‘নির্মম হত্যাকাণ্ড হইতে অব্যাহতি দিয়া লিখিয়াছেন যে, এই ঘটনা নবাবের অজ্ঞাতসারেই ঘটিয়াছিল; কিন্তু কেহ কোনদিন সঠিক ভাবে বিচার করিয়া দেখিলেন না যে, ঐরূপ একটী ক্ষুদ্রকক্ষে ১৪৬ জন ইংরাজের দাড়াইয়া থাকিবার স্থান হয় কি না। অবশ্য কেহ কেহ এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করিয়াছেন, কিন্তু ইতিহাসের পৃষ্ঠা হইতে ইহা মুছিয়া ফেলিতে চেষ্টা করেন নাই। একদিন শৈশব কালে কচি ছেলে-মেয়েরা ইতিহাসের পৃষ্ঠাটি কণ্ঠস্থ করিয়া ফেলিল, অল্প তাহাদের বয়স ও শক্তি বৃদ্ধির (১) মোগল সাম্রাজ্যের পতনকালে বঙ্গদেশ নামে মাত্র মােগলগণের অধীন ছিল। বাংলার নবাবগণকে স্বাধীন বলিলে বিশেষ কোন অত্যুক্তি হয় না।
পাতা:অন্ধকূপ-হত্যা-রহস্য - মুজিবর রহমান.pdf/৯
অবয়ব