পাতা:অন্‌ দি ভল্‌গা.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরের দিন সকালে প্রথম যে ট্রেন পেল সেই ট্রেনেই ভিক্টর দেশে চলে গেল। মফস্বলের ছােট একটা শহরে তাদের বাড়ী। সেখান থেকে খুব বেশি দূরেও নয়। কিন্তু সারাটা পথই তার কাটল ভয়ানক একটা উদ্বেগে। গাড়ীর কামরা ছেড়ে কোথাও বাইরে পর্যন্ত বেরােতে সে সাহস পেলনা। নূতন কোন যাত্রী কামরায় এসে ঢুকলেই তার শরীর কেঁপে ওঠে। সৈনিকের পােশাকপরা কাউকে জানালার পাশ ঘেযে চলে যেতে দেখলেও শঙ্কায় তার বুক দুরু দুরু করতে থাকে। বাইরের দৃশ্য দেখছে যেন এমন ভাব করে মুখ ফিরিয়ে তাকিয়ে রইল সে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে চাচ্ছিল সবার দৃষ্টি থেকে নিজের মুখটাকে আড়াল করে রাখতে—পুলিশের চোখকে ফাকি দিতে। হঠাৎ একবার তার মনে হল—“যদি ধরা পড়ি তা হলে কি হবে ? যাই হােক না কেন—জীবন তার নিঃশেষিত। নিজের ভালবাসার পাত্রীকে সে নিজহাতে ডুবিয়ে মেরেছে। এখন আর তার ভয়ের কি আছে ? বেঁচে থেকেই বা লাভ কি ? কিন্তু তবু সে ভয় পেলে-- তিন সপ্তাহ সময়মাত্র সে বাড়ীতে ছিল। কিন্তু কি দুঃসহ যন্ত্রণাই না সে অনুভব করেছে এই কয়টি দিন। দিন আর কাটতে চায়নি। তার। মা বােন কতবার জিজ্ঞাসা করেছে তাকে তার এই বিমর্ষতার কারণ। নানা অজুহাতে সে তাদের প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে। কিন্তু তবু তারা নিশ্চিত হতে পারেনি। দিনের পর দিন তাকে লক্ষ্য করেছে। তাদের এই অনুসন্ধিৎসাই তার জীবনকে করে তুলেছিল সবচেয়ে বেশি দুর্বহ। ভিক্টরের মা বুড়াে হয়েছেন। একদিন গির্জা থেকে ফিরেই তিনি পুত্রকে চুমু খেলেন। পুত্রের কল্যাণকামনায় প্রার্থনা জানালেন মনে মনে।