পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Roo অপরাজিত তেলেভাজা পরোটাই অপাের প্রাণধারণের একমাত্র উপায়। এত অপরিস্কারও তো সে অপাকে কস্মিন কালে দেখিয়াছে এমন মনে হয় না । কিন্তু প্রণবের সুব-চেয়ে বকে বাজিল যখন পরদিন বৈকালে অপ, তাহাকে সঙ্গে লইয়া গিয়া পাশের এক স্যা করার দোকানে নীচ-শ্রেণীর তাসের আভায় অ৩ি ইওর ও স্থল ধরণের হাস্য-পরিহাসের মধ্যে বসিয়া ঘন্টার পর ঘণ্টা ধরিয়া মহানন্দে ৩াস খেলি৩ে লাগিল । a অপাের ঘরটিঙে ফিরিয়া আসিয়া প্রণব বলিল – কাল আমার সঙ্গে চল অপ,-“এখানে তোকে থাকতে হবে না। এখান থেকে চল । অপ, শসময়ের সরে বলিল, কেন রে, কি খারাপ দেখালি এখানে ? বেশ জায়গা তো, বেশ লোক সবাই । ওই যে দেখালি বিশ্ববিদ্যােভর সংখণকার-উনি এদিকের একজন বেশ অবস্থাপন্ন লোক, ও’র বাড়ি দেখিস নি ? গোলা কত ! মেঠোর বিয়ে শ্রে, আমায় নেমগ্নয় করেছিল, কি খাওয়ানোটাই খাওয়ালেনউঃ ! পরে খাশীর সহিত বলিল-এখানে ওরা সব বলেছেন আমায় ধানের জমি দিয়ে বাস করাবেন নিকটেই বেগমপারে ও'দের - বেশ জায়গা-কােল তোকে দেখাব চল -- ও'রাই ঘরদের বেধে দেবেন বলেছেন- আপাতত মাটির, মানে, বিচলির ছাউনি, এদেশে উলখোঁড় হয় না। কিনা ! প্রণব সঙ্গে লইয়া যাইবার জন্য খাব পীড়াপীড়ি করিল-অপাের তকী করিল, নিজের অবস্থার প্রাধান্য প্রমাণ করিবার উদ্দেশ্যে নানা যক্তির অবতারণা করিল, শেষে রাগ করিল, বিরক্ত হইল-যাহা সে কখনও হয় না । প্রকতিতে তাহার রাগ বা বিরান্তি ছিল না। কখনও । অবশেষে প্রণব নিরাপায় অবস্থায় পরদিন সকালের ট্রেনে কলিকাতায় ফিরিয়া গেল । যাইবার সময় ৩াহার মনে হইল, সে অপ, যেন আর নেই-প্রাণশক্তির প্রচযি একদিন যাস্থার মধ্যে উছলিয়া উঠিতে দেখিয়ছে, আজ সে যেন প্রাণহীন নিম্প্রভ । এমনতর স্থল ত্যাপ্তি বা সন্তোষ-বোধ, এ ধরণের আশ্রয় আঁকড়াইয়া ধরিবার কাঙালীপনা কই অপাের প্রকাতিতে তো ছিল না। কখনও ? স্কুল হইতে ফিরিয়া রোজ অপম নিজের ঘরের রোয়াকে একটা হাতলভাঙা চেয়ার পণ্ডিয়া বসিয়া থাকে । এখানে সে অত্যজিত একা ও সঙ্গীহীন মনে করে, বিশেষ করিয়া সন্ধ্যাবেলা । সেটা এত অসহনীয় হইয়া উঠে, কোথাও একটু বসিয়া গলপ-গজব করিতে ভাল লাগে, মানষের সঙ্গ সপোহনীয় মনে হয়, কিন্তু এখানে অধিকাংশই পাটকলের সদর, বাব, বাজারের দোকানদার, তাও সবাই তাহার অপরিচিত । বিশ, স্যাকরার দোকানের সান্ধ্য আন্ডা। সে নিজে খাজিয়া বাহির করিয়াছে, তব্যও ন’টা-দশটা পর্যন্ত রাত একরকম কাটে ভালই । অপাের ঘরের রোয়াকটার সামনেই মাটিন কোম্পানীর ছোট লাইন, সেটা পার হইয়া একটা পাকুর, জল যেমন অপরিৎকার, তেমনি বিসবাদ। পকুরের ওপারে একটা কুলিবন্তি, দ'বেলা যত ময়লা কাপড় সবাই এই পাকুরেই কাচিতে নামে । রৌদ্র উঠিলেই কুলি লাইনের ছাপ-মারা খয়েরী-রংয়ের