পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু বেচারী সর্বজয়া কি করিয়া জানিবে ? সকলেই তো কিছু ‘সর্বসংগ্রহ’ পড়ে নাই বা সকলেই কিছু পারদের গুণও জানে না। আকাশে তাহা হইলে তো সকলেই উড়িত । পথের পাঁচালী উনবিংশ পরিচ্ছেদ অনেক দিন হইতে গ্রামের বৃদ্ধ নরোত্তম দাস বাবাজির সঙ্গে অপুর বড় ভােব। গাঙ্গুলী পাড়ার গৌরবর্ণ, দিব্যাকান্তি, সদানন্দ বৃদ্ধ সামান্য খড়ের ঘরে বাস করেন । বিশেষ গোলমাল ভালবাসেন না, প্রায়ই নির্জনে থাকেন, সন্ধ্যার পর মাঝে মাঝে গাঙ্গুলীদের চণ্ডীমণ্ডপে গিয়া বসেন। অপুর বাল্যকাল হইতে হরিহর ছেলেকে সঙ্গে করিয়া মাঝে মাঝে নরোত্তম দাসের কাছে লইয়া যাইতসেই হইতেই দুজনের মধ্যে খুব ভাব। মাঝে মাঝে অপু গিয়া বৃদ্ধের নিকট হাজির হয়, ডাক দেয়,-দাদু আছো ? বৃদ্ধ তাড়াতাড়ি ঘর হইতে বাহির হইয়া লতাপাতার চাটাইখানা দাওয়ায় পাতিয়া দিয়া বলেন-এসে দাদাভাই এসে বসে বসে।-- অন্যস্থানে অপু মুখচোরা, মুখ দিয়া কথা বাহির হয় না-কিন্তু এই সরল শাস্তাদর্শন বৃদ্ধের সঙ্গে সে সম্পূর্ণ নিঃসঙ্কোচে মিশিয়া থাকে, বৃদ্ধের সঙ্গে তাহার আলাপ, খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে আলাপের মত ঘনিষ্ঠ, বাধাহীন ও উল্লাস-ভরা ? নরোত্তম দাসের কেহ নাই, বৃদ্ধ একাই থাকেন-এক স্বজাতীয় বৈষ্ণবের মেয়ে কাজকর্ম করিয়া দিয়া চলিয়া যায়। অনেক সময় সারা বিকাল ধরিয়া অপু বসিয়া বসিয়া গল্প শোনে ও গল্প করে। একথা সে জানে না যে, নরোত্তম দাস বাবাজি তাহার বাবার অপেক্ষাও বয়সে অনেক বড়, অন্নদা রায়ের অপেক্ষাও বড় -কিন্তু এই বয়োবৃদ্ধতার জন্যই অপুর কেমন যেন মনে হয় তার সতীর্থ, এখানে আসিলে তাহার সকল সঙ্কোচ, সকল লজ্জা আপনা হইতেই ঘুচিয়া যায়। গল্প করিতে করিতে অপু মন খুলিয়া হাসে, এমন সব কথা বলে যাহা অন্যস্থানে সে ভয়ে বলিতে পারে না, পাছে প্রবীণ লোকেরা কেহ ধমক দিয়া ‘জ্যাঠা ছেলে’ বলে। নরোত্তম দাস বলেন--দাদু, তুমি আমার গৌর্যতোমাকে দেখলে আমার মনে হয়। দাদু, আমার গৌর তোমার বয়সে ঠিক তোমার মতই সুন্দর, সুশ্রী, নিষ্পাপ ছিলেন-ওই রকম ভাবমাখানো চোখ छिन ऊँiझe অন্যস্থানে এ কথায় অপুর হয়ত লজা হুইত, এখানে সে হাসিয়া বলে-দাদু 》88