পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গাবতলার ছায়ায় ছায়ায় তাহার সুকুমার বালকমুতি ভঁাটশেওড়া ঝোপের আড়ালে অদৃশ্য হইয়া গেলে হঠাৎ সর্বজয়ায় মনে লইল, বডড ছেলেমানুষ, আহা এই বয়সে বেরিয়েছে নিজের রোজগার নিজে করতে। অপুর আমার যদি ঐরকম হোত-মাগো !• • • পথের পাঁচালী ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ প্রথম প্রথম যখন হরিহর কাশী হইতে আসিল তখন সকলে বলিত, তাহার ভবিষ্যৎ বড় উজ্জ্বল, এ অঞ্চলে ওরকম বিদ্যা শিখিয়া কেহ আসে নাই । তাহার বিদ্যার সুখাতি সকলের মুখে ছিল, সকলে বলিত সে এইবার একটা কিছু করিবে। সর্বজয়াও ভাবিত, শীঘ্রই উহারা তাহার স্বামীকে ডাকাইয়া একটা ভাল চাকরী দিবে ( কাহারা চাকরী দেয় সে সম্বন্ধে তাহার ধারণা ছিল কুয়াসাচ্ছন্ন সমুদ্র-বক্ষের মত অস্পষ্ট ) ! কিন্তু মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর করিয়া বহুকাল চলিয়া গেল, অর্ধারাত্রির মাথায় কোনো জরির পোশাকপর ঘোড়সওয়ার সভাপণ্ডিত পদের নিয়োগ-পত্র লইয়া ছুটিয়া আসিল না, বা আরব্য উপন্যাসের দৈত্য কোন মণি-খচিত মায়াপ্রাসাদ আকাশ বাহিয়া উড়াইয়া আনিয়া তাহদের ভাঙা ঘরে বসাইয়া দিয়া গেল না, বরং সে ঘরের পোকা-কাটা কবাট দিন দিন আরও জীর্ণ হইতে চলিল, কড়িকাঠ। আরও ঝুলিয়া পড়িতে চাহিল ; আগে যাও বা ছিল তাও আর সব থাকিতেছে না, তবু সে একেবারে আশা ছাড়ে নাই ! হরিহর ও বিদেশ হইতে আসিয়া প্রতিবারই একটা একটা আশার কথা এমনভাবে বলে, যেন সব ঠিক, অল্পমাত্র বিলম্ব আছে, অবস্থা ফিরিল বলিয়া । কিন্তু হয় কৈ ?-- জীবন বড় মধুময় শুধু এইজন্য যে, মাধুর্ধের অনেকটাই স্বপ্ন ও কল্পনা দিয়া গড়া। হোকৃ না। স্বপ্ন মিথ্যা, কল্পনা বাস্তবতার লেশশূন্য , নাট প{ থাপিল সব সময় তাহাদের পিছনে সার্থকতা ; তাঙ্গারাই যে জীবনের শ্রেম' সম্পদ তাহারা ? আসুক, জীবনে অক্ষয় হােক তাহাদের আসন ; তুচ্ছ সার্থ তা, তুচ্ছ লাভ। হরিহর বাড়ী হইতে গিয়াছে প্রায় দুষ্ট তিন মাস। টাকাকড়ি খরচপত্র অনেক দিন পাঠায় নাই। দুর্গা অসুখে ভুগিতেছে একটু পেশী, খায় দায় অসুখ হয়, দু’দিন একটু ভাল থাকে, হঠাৎ একদিন আবার হয়। সর্বজয়া মেয়ের বিবাহের জন্য স্বামীকে প্রায়ই তাগাদ দেয়। স্বামীকে &ూ