পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উড়াইয়া দিয়াছিল, সেই মাত্র সেটা পশ্চিম দিগন্তে পৃথিবীর বানান্তরালে নামিয়া পড়িতেছে। পিছন হইতে কে তাহার চোখ টিপিয়া ধরিল। সে জোর করিয়া হাত দিয়া চোখ ছাড়াইয়া লইতেই পটু খিলখিল করিয়া হাসিয়া সামনে আসিয়া বলিলতোকে খুঁজে খুঁজে কোথাও পাইনে অপুদা ; তারপর ভাবলাম তুই ঠিক মাছ ধর্তে এইছিস, তাই এলাম। মাছ হয় নি ?'-একটাও না ? চল বরং একখানা নৌকা খুলে নিয়ে বেডিয়ে আসি-যাবি ? কদমতলায় সায়েরের ঘাটে অনেক দূরদেশ হইতে নৌকা আসে, গোলপাতা বোঝাই, ধান বোঝাই, ঝিনুক বোঝাই নৌকা সারি সারি বঁাধা । নদীতে জেলেদের ঝিনুক তোলা নৌকায় বড় জাল ফেলিয়াছে। এ সময় প্রতি বৎসরই ইহারা দক্ষিণ হইতে ঝিনুক তুলিতে আসে, মাঝ-নদীতে নৌকায় নৌকায় জোড়া দিয়া দাড় করাইয়া রাখিয়াছে। অপু ডাঙায় বসিয়া দেখিতেছিল—একজন কালোমত লোক বার বার ডুব দিয়া ঝিনুক খুজিতেছে ও অল্পক্ষিণ পরে নৌকার পাশে উঠিয়া হাতের থলি হইতে দু’চারিখানা ঝিনুক বালি-কাদার রাশি হইতে ছাকিয় নৌকার খোলে ছুড়িয়া ফেলিতেছে। অপু খুশির সহিত পটুকে আঙ্গুল দিয়া দেখাইয়া বলিল-দেখছিস পটু, কতক্ষণ ডুব দিয়ে থাকে ? আয় গুণে দেখি এক দুই ক’রে। পারিস তুই অতিক্ষণ ডুবে থাকৃতে ?••• গিয়াছে, এখানে-ওখানে বোঝাই নৌকায় খোটা পোতা-নোঙর ফেলা। ইহারা কত দেশ হইতে আসিয়াছে, কত বড় নদী খাল পার হইয়া, বড় বড় নোনা গাঙের জোয়ার-ভাটা তুফান খাইয়া বেড়ায়,--অপুর ইচ্ছা করে মাঝিদের কাছে বসিয়া সে সব দেশের গল্প শোনে ? তাহার কেবল নদীতে নদীতে, সমুদ্রে সমুদ্রে বেড়াইতে ইচ্ছা হয়, আর কিছু সে চায় না। সুরেশের বইখানাতে নানা দেশের নাবিকদের কথা পড়িয়া অবধি ঐ ইচ্ছাই তাহার মনে প্রবল হইয়া উঠিয়াছে। পটু ও সে নৌকার কাছে গিয়া দর করে-ও মাঝি, এই গোলপাতা একপট কি দর ?--"তোমার এই ধানের নৌকো কোথাকার, ও মাঝি ? ঝালকাটির ? সে কোন দিকে, এখেন থেকে কতদূর ?-- পটু বলিল-আপুঢ়া, চল তেঁতুলতলার ঘাটে একখানা ডিঙি দেখি, একটু cवझिम्र अनि छन्। দু’জনে তেঁতুলতলার ঘাট হইতে একখানা ছোট-ডিঙি খুলিয়া লইয়া, তাহাকে এক ঠেলা দিয়া ভিঞ্জির উপর চড়িয়া বসিল । নদীজলের ঠাণ্ড আৰ্দ্ধ