পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্টো!! তাহাকে বেশীক্ষণ ধরিয়া দেখিয়াছে কি ঠাকুরের আরতি বেশীক্ষণ দেখিয়াছে, তাহা সে জানে না। ঠাকুর-দেবতার মন্দির ছাড়া এক-একখানা বসতবাড়ীই বা কি ! --দুর্গোৎসবের নিমন্ত্রণে নিশ্চিন্দিপুরের গাঙ্গুলী বাড়ী গিয়া সে গাঙ্গুলীদের নাটমন্দির দো-মহলা বাড়ী, বাধানো পুকুরঘাট দেখিয়া মনে মনে কত ঈর্ষান্বিত হইতমনে আছে একবার দুর্গাকে বলিয়াছিল--দেখেচিস বড়লোকের বাড়ীীঘরের কি লক্ষ্মী ছিরি ?—এখন সেসব বাড়া রাস্তার দুধারে দেখিতেছে-তাহার কাছে গাঙ্গুলীবাড়ী ? এত গাড়ীঘোড়া একসঙ্গে যাইতে কখনও সে দেখে নাই। গাড়ীই বা কত ধরণের ! আসিবার দিনে রাণাঘাটে, নৈহাটিতে সে ঘোড়ার গাড়ী দেখিয়াছে, বটে, কিন্তু এত ধরণের গাড়ী সে আগে কখনো দেখে নাই। দুচাকার গাড়ীই যে কত যায় ! তাহার তো ইচ্ছা করে পথের ধারে দাড়াইয়া দু’দণ্ড এই সব দ্যাখে-কিন্তু স্ত্রীলোকটি সঙ্গে থাকে বলিয়া লজ্জায় পারে না । অপু তো একেবারে অবাক হইয়া গিয়াছে; এরকম কাণ্ডকারখানা সে কখনো কল্পনায় আনিতে পারে নাই। তাদের বাসা হইতে দশাশ্বমেধ ঘাট বেশী দূর নয়, রোজ বিকালে সেখানে বেড়াইতে যায়। রোজই যেন চড়কের মেলা লাগিয়াই আছে। এখানে গান হইতেছে, ওখানে কথা হইতেছে, ওদিকে কে একজন রামায়ণ পড়িতেছে, লোকজনের ভিড়, হাসিমুখ, উৎসব, অপু সেখানে শুধু ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইয়া দেখে আর সন্ধ্যার পর বাড়ী আসিয়া মহা-উৎসাহে গল্প করে । কাহাদের চাকর একটি ছোট ছেলেকে কোমরে দড়ি বাধিয়া রোজ বেড়াইতে আনে, অপু ভাব করিয়াছে।--তাহার নাম পণ্ট, ভাল করিয়া কথা কহিতে জানে না, ভারি চঞ্চল, তাই পাছে হারাইয়া যায় বলিয়া বাড়ীর লোকেদের এই জেলকয়েদীর মত ব্যবস্থা । অপু হাসিয়া খুন। চাকরকে অনুরোধ করিয়াছিল। কিন্তু সে ভয়ে দড়ি খুলিতে চাহে না । বন্দী নিতান্ত ক্ষুদ্র ও অবোধ-এ ধরণের ব্যবহার যে প্রতিবাদযোগ্য, সে জ্ঞানই তাহার নাই। বাড়ী আসিলে সর্বজয়া রোজ তাহাকে বকে-একলা একলা ওরকম যাস কেন ? শহর বাজার জায়গা, যদি রাস্ত হারিয়ে ফেলিস ?-মায়ের আশঙ্কা যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, একথা সে মাকে হাত নাড়িয়া দু’বেল অধ্যবসায়সহকারে বুঝায়। কাশীতে আসিয়া হরিহরের আয়ুও বাড়িল। কয়েক স্থানে হাটাহঁাটি ঋরিয়া সে কয়েকটি মন্দিরে নিত্য পুরাণ-পাঠের কার্য যোগাড় করিল। তাহা ছাড়া একদিন সর্বজয়া স্বামীকে বলিল,-দশাশ্বমেধ ঘাটে রোজ বিকেনেNৈ Resi ,