পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰদি গুণ্ড ছেলে হয় তা হলে বাছা-ইত্যাদি। রুটির ঘর হইতে আসিয়া দেখিলা অপু স্কুল গিয়াছে, মাকে কিছু বলে মাই, এসব কথা সে কখনো মাকে বলেও না। রাগে, দুখে, ক্ষোভে সৰ্বজয়ার গা ঝিম্ ঝিম করিতে লাগিল, সর্বাঙ্গ হইতে যেন ঝাল বাহির হইতে থাকিল, ঘরে না থাকিতে পারিয়া সে বাহিরের অপরিসর বারান্দাটাতে আসিয়া দাড়াইল । তাহার অপুর গায়ে হাত ! সে যে এখনও বলে, মা সিডির ঘর দিয়ে যখন তুমি রান্নাবাড়ী থেকে আসবে, তখন রাত্রে তোমায় এমন ভয় দেখাবো ? —তাহার কি কোনো বুদ্ধি আছে ? কত লাগিয়াছিল, কে তাহাকে বুঝিয়াছে সেখানে, কে শুনিয়াছে তাহার কান্না ? সর্বজয়া বুক ফাটিয়া কান্না আসিল - বী-বী দুপুর-আকাশে দু একটি পাখী সেই উচুতে উডিয়া বেড়ায়আস্তাবলের মাথায় আমলকী গাছের ডালে বাতাসে বাধে,• • •দালানের কোণের লোহার ফুটা চৌবাচ্চার পাশে বসিয়া কথাটা ভাবিতে কান্নার বেগে তাহাব সর্বশরীর কঁাপিতে লাগিল --ঠাকুর, ঠাকুর, ও আমার বড় আদরের ধন, তুমি তো জানো ও একদণ্ড চােখেব আডাল থেকে সরলে আমি থির থাকতে পারি নে, যা কিছু শান্তি দেবার আমার ওপর দিয়ে দাও ঠাকুর, ওকে কিছু বোলো না, আমার বুক ফেটে যায় ঠাকুর, তা আমি সইতে পারবো না সকাল সকাল অপুঙ্গেয় স্কলের ছুটি হইয়া গেল। তাহার ক্লাসের ছেলেরা ধরিল তাহদের ফুটবল খেলায় অপুকে রেফারা হইতে হইবে। অপু ভারি খুশি হইল, ফুটবল খেলা সে এ শহরে আসিবার পূর্বে কোনোদিন দেখে নাই, সে খুব ভাল খেলিতেও পারে না, তবুও কিন্তু ক্লাসের ছেলেরা তাহাকেই সকলের চেয়ে পছন্দ করে, খেলার রেফারী হইতে প্রায়ই তাহার ডাক পড়ে। সে বলিল-সেই বড় হুইসিলটা বাড়ী থেকে নিয়ে আসি ভাই, বাক্সে প’ডে রয়েচে, আমি ঠিক চারটের সময় মাঠে যাবো এখন পথে আসিতে আসিতে অপুর সকালের কথা মনে উঠিল। আজ সারা দিনটাই সে সে-কথা ভাবিয়াছে। বার্ডসাই খাইতে গিয়া সেদিন গিরিশ সরকারের সামনে পড়িয়া গিয়াছিল একথা ঠিক, কিন্তু বার্ডসাই কি সে রোজ খায় ? সেদিন মেজ বৌ-রাণীর দেওয়া রাঙা পাঞ্জাবীটা গায়ে দিয়া স্কুল হইতে ফিরিবার পথে তাহার হঠাৎ সখী হইয়াছিল, এই রকম পাঞ্জাবী গায়ে দিয়া বাবুরা বার্ডসাই খায়, সেও একবার খাইবে। তাই খাবারের পয়সাটায় বার্ডসাই কিমিয়া সে ধরাইয়া খাইতেছিল, কিন্তু সেই একদিন নিশ্চিন্দিপুৱে লুকাইয়া Ra