পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু আজকার সমুদয় ব্যাপারে, বিশেষ করিয়া মায়ের ও বডবাবুর কথায় তাহাদের নিরাশ্রয়তা ও গৃহহীনতার দিকটা তাহার কাছে বেশ স্পষ্ট হইয়া উঠিল। আর কি কখনও সে তাহদের গায়ে ফিরিতে পাইবে না-? --কখনো ーT ?一卒ぐicT T ? এই বিদেশ, এই গিরিশ সরকার, এই চোর হইয়া থাকা-না হয় মায়েছেলে হাত ধরিয়া ছন্নছাড পথে পথে চিরকাল-এরাই কি কায়েম হইতে আসিয়াছে ? আস্তাবলে দুই সহিসে ঝগড়া বাধাইয়াছে, রান্নাবাড়ীর ছাদে কাকের দল ভাতের লোভে দলে দলে জুটিতেছে-একটু পরে তাহার মনে হইল, একই কি কথা অনেকক্ষণ ধরিয়া ভাবিতেছে, একই কি কথা ! আস্তাবলে ঘোডার খুরের আওয়াজ থামে নাই-সে যেন মাটির ভিতর কোথায় সেঁধিয়া যাইতেছে-খুব -খুব মাটির ভিতর-নীচের দিকে কে যেন টানিতেছে।--বেশ আরাম--মাথা ধরা নাই • • • বেশ আরাম ! উ:-কি রোদটাই কী কী করিতেছে! দিদির যা কাণ্ড-এত রোদরে চড়ুইভাতি ! সে বলিতেছে--দিদি শুয়ে নে, এত রোদরে চড়ুইভাতি ? বাণুদি কানের কাছে বসিয়া কি সব কথা, অনেক কি সব কথা বলিয়া যাইতেছে। রাণুদির ছলছলে ডাগর চোখ দুটি অভিমান-ভরা ! সে কি করিবে ? নিশ্চিন্দিপুরে তাদের চলে না যে ! রাণুদি না লীলা ? হারাণ কাকা বঁাশের বঁাশি বেচিবার জন্য আনিয়া বাজাইতেছে- ভারি চমৎকার বাজায় । সে বাবাকে বলিল—এক পয়সার বঁাশের বঁাশি কিনবো বাবা একটা পয়সা দেবে ? তাহার বাবা তাহার বড় বড় চুল কানের পাশে তুলিয়া দিতে দিতে আদর করিয়া বলিতেছে।--বেশ হয়েচে তোর গল্পটা, ছাপিয়ে এলে আমায় দেখতে দিল খোকা ? সে বলিতেছে-কোকেন। কি বাবা ? গিরিশ সরকার বলেচে। আমি নাকি কোকেন খাবো।-- বাবার গলায় পদ্মবীজের মালা। সেই কথক ঠাকুরের মত । তাহাদের মাঝেরপাড়ার ইষ্টিশান । কাঠের বড় তক্তাটায় লেখা আছে, মা-কে-র-পাড়া। সে আগে আগে ভারী বেঁচকাটা পিঠে, মা পিছনে পিছনে । তাহার গায়ে রাঙা পাঞ্জাবীটা । কেমন ছায়া সারাপথে । আকাশে সন্ধ্যাতারা উঠিয়াছে। পাকা বটফলের গন্ধেভরা বাতাসটা । নিশ্চিন্দিপুরের পথ যেন ফুৱাইতেছে না- “সে চলিয়াছে - চলিয়াছে'- ቅፃዓ