পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঢালিয়া দিল। জল কিন্তু মুখের মধ্যে গেল না, বিশু পালিত বলিল-আর একবার দাও দাদাঠাকুর আর খানিকক্ষণ পরে ফণী বুড়ীর চোখের পাতা বুজাইয়া দিতেই কোটরগত অনেকখানি জল শীর্ণ গালি-দুটা বাহিয়া গড়াইয়া পড়িল । ইন্দির ঠাকুরুণের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিন্দিপুর গ্রামে সেকালের অবসান হত্বহমা গেল । आंभ-अंत्रिज्ञ cङ’ब्रू পথের পাঁচালী সপ্তম পরিচ্ছেদ ইন্দিব ঠাককণেব মৃত্যুর পর্ব চাব পাঁচ বৎসর কুটিয়া গিয়াছে। মাঘ মাসের শেষ, শীত বেশ আছে। দুই পাশে ঝোপে-বাপে-ঘেরা সরু মাটির পথ বাহিয়। নিশ্চিন্দিপুবেৰ কয়েকজন লোক সরস্বতীপূজাব বৈকালে গ্রামের বাহিরের মাঠে নীলকণ্ঠ পাখী দেখিতে যাইতেছিল। দলের একজন বলিল, ওঙ্গে হরি, ভূষণে গোয়ালার দরুণ কলাবাগানটা তোমরা কি ফের জমা দিয়েচো ? যাহাকে উদ্দেশ করিয়া কথা বলা হইল তাহাকে দেখিলে দশ বৎসর পূর্বের সে হবিহ'ব রায় বলিয়া মনে হয় না। এখন যে মধ্যবয়সী, পুরাদস্তুর সংসারী, ছেলেমেয়েদের বাপ হরিহাব খাজনা সাধিয়া গ্রামে গ্রামে ঘোরে, পৈতৃক আমলের শিস্য-সেবকের ঘরগুলি সন্ধান করিয়া বসিয়া গুরুগিরি চালায়, হাটেমাঠে জমির ঘবামির সঙ্গে বিঙে-পটলের দরদস্তুর করিয়া ঘোরে, তাহার সঙ্গে আগেকার সে অবাধাগতি, মুক্ত প্রাণ, ভবঘুরে যুবক হরিহরের কোন মিল নাই । ক্রমে ক্রমে পশ্চিমের সে-জীবন অনেক দূরের হইয়া গিয়াছে—সেই চুণার দুর্গের চওড়া | প্রাচীলে বসিয়া বসিয়া দূর পাহাডের সূর্যান্ত দেখা, কেদারের পথে তেজপাতার বনে রাত-কাটানো, শাহ কাশেম সুলেমানীর দরগার বাগান হইতে টক কমলা লেবু ছিডিয়া খাওয়া, গলিত-রৌপ্যধারার মত স্বচ্ছ, উজ্জল হিমশীতল স্বৰ্গনদী লকানন্দা, দশাশ্বমেধ ঘাটের জলের ধারের রাণা-একটু একটু মনে পড়ে, অনেকদিন আগেকায় দেখা স্বপ্ন । VS