পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরিহর সায়সূচক কিছু বলিতে গিয়া পিছন ফিরিয়া বলিল, ছেলেটা আবার কোথায় গেল ? ও খোকা, খোকা-আ-আ- পথের বঁাকের আড়াল হইতে একটি ছয় সাত বছরের ফুটফুটে সুন্দর, ছিপছিপে চেহারার ছেলে ছুটিয়া আসিয়া দলের নাগাল ধরিল। হরিহর বলিল-আবার পিছনে পড়লে এরি মধ্যে ? নাও এগিয়ে চলোছেলেটা বলিল-বনের মধ্যে কি গেল বাবা ? বড় বড় কান ? হরিহর প্রশ্নের দিকে কোনো মনোযোগ না দিয়া নবীন পালিতের সঙ্গে মৎস্য-শিকারের পরামর্শ আঁটিতে লাগিল । হরিহরের ছেলে পুনরায় আগ্রহের সুরে বলিল-কি দৌড়ে গেল বাবা। বনের মধ্যে ? বড় বড় কান ?-- হরিহর বলিল-কি জানি বাবা, তোমার কথার উত্তর দিতে আমি আর পারিনে। সেই বেরিয়ে তবধি সুরু করেচো এটা কি, ওটা কি-কি গোল বনের মধ্যে তা কি আমি দেখেচি ? নাও এগিয়ে চলো দিকি ! বালক বাবার কথায় আগে চলিল । নবীন পালিত বলিল, এক কাজ করে হরি, মাছ যদি ধরতে হয়, তবে বঁয়াশার বিলে একদিন চলে যাওয়া যাকৃ-পূব-পাডার নেপাল পাডুই বাচ। দিচ্চে, রোজ দেডমণ দু’মণ এইরকম পডচে-পাচ-সেরের নীচে মাছ নেই ! শুনলাম, একদিন শেষরাত্তিরে নাকি বিলের একেবারে মধ্যিখানে অথৈ জলে সঁ সঁ করে ঠিক যেন বকনা বাছুরের ডাক-বুঝলে ? সকলে একসঙ্গে আগাষ্ট্ৰয়। আসিয়া নবীন পালিতের মুখের দিকে চাহিয়া अश्लि । -অনেক-কেলে পুরোনো বিল, গহিন জল, দেখেছে তো মধ্যিখানে জল যেন কালো শিউগোলা, পদ্মগাছের জঙ্গল, কেউ বলে রাঘব বোয়াল, কেউ বলে যক্ষি-যতক্ষণ ফর্সা না হোলো ততক্ষণ তো মশাই নৌকোর ওপরে সকলে বসে ঠক্‌ ঠক্‌ করে কঁাপিতে লাগলো বেশ জামিয়া আসিয়াছে, হঠাৎ হরিহরের ছেলেটি মহা-উৎসাহে পাশের এক উলুখডের ঝোপের দিকে আঙলি তুলিয়া চীৎকার করিতে করিতে চুটিয়া গেল-ঐ যাচ্ছে বাবা, ঐ গেল বাবা, বড় বড় কান, ঐ তাহার বাবা পিছন হইতে ডাক দিয়া বলিল, উন্থ উহু উহু-কঁটা কাটা কঁাটা-পরে তাড়াতাড়ি আসিয়া খপ করিয়া ছেলের হাতখানি ধরিয়া - -আ: বড় বিরক্ত কল্পে দেখচি তুমি, একশ’ বার বারণ কচ্চি না তুমি কিছুতেই শুনবে না, ঐ জন্যেই তো আনতে চাচ্ছিলাম না। V9R