পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাসের শেষে অখিলবাবু অপুর জন্য একটা ছেলে পড়ানো ঠিক করিয়া দিলেন, দুইবেল একটা ছোট ছেলে ও একটি মেয়েকে পড়াইতে হইবে, মাসে পনেরো bfक । অখিলবাবুর মেসে পরের বিছানায় শুইয়া থাকা তাহার পছন্দ হয় না। কিন্তু কলেজ হইতে ফিরিয়া পথে কয়েকটি মেসে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিল, পনেরো টাকা মাত্র আয়ে কোনো মেসে থাকা চলে না। তাহার ক্লাসের কয়েকটু ছেলে মিলিয়া একখানা ঘর ভাড়া করিয়া থাকিত, নিজেরাই রাধিয়া খাইত, অপুকে ऊांशज्ञ नक्षेऊ ज्ञांडौ श्रुंन । যে তিনটি ছেলে একসঙ্গে ঘর ভাডা করিয়া থাকে, তাহদের সকলেরই বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায়। ইহাদের মধ্যে সুরেশ্বরের আয় কিছু বেশী, এম-এ ক্লাসের ছাত্র, চল্লিশ টাকার টিউশনি আছে । জানকী যেন কোথায় ছেলে পড়াইয়া কুড়ি টাকা পায় । নিৰ্মলের আয় আরও কম। সকলের আয় একত্র করিয়া যে মাসে যাহা আকুলান হয়, সুরেশ্বর নিজেই তাহা দিয়া দেয়, কাহাকেও বলে না। অপু প্রথমে তাহা জানিত না, মাস দুই থাকিবার পর তাহার সন্দেহ হইল প্রতিমাসে সুরেশ্বর পচিশ-ত্রিশটাকা দোকানের দেন শোধ করে, অথচ কাহারও নিকট চায় না কেন ? সুরেশ্বরের কাছে একদিন কথাটা তুলিলে, সে হাসিয়া উড়াইয়া দিল । সে বেশী এমন কিছু দেয় না, যদিই বা দেয়তাহাতেই বা কি ? তাহদের যখন আয় বাড়িবে তখন তাহারাও অনায়াসে দিতে পরিবে, কেহ বাধা দিবে না। তখন। নির্মল রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করিতে করিতে ঘরে ঢুকিল। তাহার গায়ে খুব শক্তি, সুগঠিত মাংসপেশী, চওড়া বুক। অপুর মতই বয়স। হাতের ভিতর একটা কাগজের ঠোঙা দেখাইয়া বলিল-নতুন মটরশুটি লঙ্কা দিয়ে ভেজে অপু হাত হইতে ঠোঙাটা কাড়িয়া লইয়া বলিল-দেখি ? পরে হাসিমুখে বলিল-সুরেশ্বরদা, স্টোভ ধরিয়ে নিন-আমি মুড়ি আনি-ক’পয়সার আনবো ? এক-দুই-তিন-চার -আমার দিকে আঙুল দিয়ে গুণো না ওরকম অপু হাসিয়া নির্মলের দিকে আঙলি দেখাইয়া বলিল-তোমার দিকেই আঙল বেশী ক’রে দেখাবো-তিন-তিন-তিন নির্মল তাহাকে ধরিতে যাইবার পূর্বে সে হাসিতে হাসিতে ছুটিয়া বাহির হইয়া গেল। সুরেশ্বর বলিল-একরাশ বই এনেছে কলেজের লাইব্রেরী