পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপু তো লেখে নাই, পত্রে তো একথা অপর্ণাকে জানায় নাই যে, মিত্তির বাড়ির কম্পাউণ্ডের চাপা ফুল গাছটা তাহাকে কি কষ্টই না দিয়াছে, এই দু’মাস ! চাপা ফুল যে হঠাৎ তাহার এত প্রিয় হইয়া উঠিয়াছে, একথাটি মনে মনে অঙ্গমান করিবার জন্য এই কর্মব্যস্ত, সাদা-হাসিমুখ মেয়েটির উপর তাহার মন কৃতজ্ঞতায় ভরিয়া উঠিল। অপর্ণা বলিল-এখানে একটু বেড়া দিয়ে ঘিরে দেবে ? মাগো, কি ছাগলের উৎপাতই তোমাদের দেশে ! চারাগাছ থাকতে দেয় না, বোজ খেয়েদেয়ে সারা দুপুর কঞ্চি হাতে দাওয়ায় ব’সে ছাগল তাড়াই আর বই পডি -দুপুরে রোজ নিরুদি আসেন, ও-বাডির মেয়ের আসে, ভারী ভাল মেয়ে किड्डु निझशिक् ि। আজ সারাদিন ছিল বর্ষা । সন্ধ্যার পর একটানা বৃষ্টি নামিয়াছে, হয়ত বা সারাদিন রাত্রি ধরিয়া বর্ষা চলিবে”। বাহিরে কৃষ্ণাষ্টমীর অন্ধকারে মেঘে। ঘনীভূত করিয়া তুলিয়াছে। বধু বলিল-রান্নাঘরে এসে বসবে ? গরম গরম সেঁকে দি- অপু বলিল-তা হবে না, আজ এসে আমরা দুজনে এক পাতে খাবো । অৰ্পণা প্রথমটা রাজী হইল না, অবশেষে স্বামীর পীড়াপীডিতে বাধ্য হইয়া একটা থালায় রুটি সাজাইয়া খাবার ঠাই করিলা । অপু দেখিয়া বলিল,-ও হবে না, তুমি আমার পাশে বসো, ও-রকম বসলে চলবে না। আরও একটু-আরও-পরে সে বঁা-হাতে অপর্ণার গলা জড়াইয়া ধরিয়া বলিল-এবার এসে দু’জনে খাই বধু হাসিয়া বলিল-আচ্ছা তোমার বদখেয়ালও মাথায় আসে, মাগো মা ! দেখতে তো খুব ভালমানুষটি । লাভের মধ্যে বধূর একরূপ খাওয়াই হইল না সেরাত্রে। অন্যমনস্ক অপু গল্প করিতে করিতে থালায় রুটি উঠাইতে উঠাইতে প্রায় শেষ করিয়া ফেলিলপাছে স্বামীর কম পড়িয়া যায় এই ভয়ে সে বেচারী খান-তিনের বেশী নিজের জন্য লইতে পারিল না। খাওয়ার পর অৰ্পণা বলিল-কই, কি বই এনেছ বললে, দেখি ? দু'জনেই কৌতুকপ্রিয় সমবয়সী সুস্থ মন, বালকবালিকার মত আমোদ করিতে, গল্প করিতে, সারারাত জাগিতে, অকারণে অর্থহীন বকিতে দুজনেরই সমান আগ্রহ, সমান উৎসাহী। অপু একখানা নতুন-আনা বই খুলিয়া বলিল -পড়ে তো এই পদ্যটা ? অৰ্পণা প্রদীপের সলতেটা চ্যাপার কলির মত আঙুল দিয়া উস্কাইয়া দিয়া _పడిడా