পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুযোগ খুজিতেছিলেন-ছিদ্রটা এত দিন পান নাই-পাইলে কি আর একটা অনভিজ্ঞ ছোকরাকে জব্দ করিতে এতদিন লাগিতা ? হেডমাস্টার কিছু জানেন না-সেক্রেটারীব ইচ্ছা, তাহার হাত নাই । সেক্রেটারী জানাইলেন, কথাটা এই যে, অপূর্ববাবুর নামে নানা কথা রািটয়াছে, দীঘড়ী বাডির মেয়েটির এই সব ঘটনা লইয়া। অনেকদিন হইতেই এ লইয়া তাহাব কানে কোন কোন কথা গেলেও তিনি শোনেন নাই । কিন্তু সম্প্রতি ছেলেদের অভিভাবকদের মধ্যে অনেকে আপত্তি করিতেছেন যে, ও-রূপ চরিত্রের শিক্ষককে কেন রাখা হয়। অপুর প্রতিবাদ সেক্রেটারী কানে তুলিলেন না। --দেখুন, ও-সব কথা আলাদা। আমাদের স্কুলের ও ছাত্রদের দিক থেকে এ-ব্যাপারটা অন্যভাবে আমরা দেখব। কিনা ! একবার র্যার নামে কুৎসা রটেছে, তঁাকে আর আমরা শিক্ষক হিসাবে রাখতে পারি নে-তা সে সত্যিই হোক বা মিথ্যেই হোক । অপুব মুখ লাল হইয়া গেল এই বিরাট অবিচারে। সে উত্তেজিত সুরে বলিল --বেশ তো মশায়, এ বেশ জাষ্টিস’ হ’ল তো ? সত্যি মিথ্যে না জেনে আপনার একজনকে এই বাজারে অনায়াসে চাকরি থেকে ছাডিয়ে দিচ্ছেন বেশ তো ! বাহিরে আসিয়া রাগে ও ক্ষোভে অপুর চোখে জল আসিয়া গেল। মনে ভাবিল এসব হেডমাস্টারের কারসাজি-আমি যাব তার বাড়ি খোশামোদ করতে ? যায় যাকৃ চাকরি । কিন্তু এদের অদ্ভুত বিচার বটে-ডিফেণ্ড করার একটা সুযোগ তো খুনী আসামীকে দেওয়া হয়ে থাকে, তা-ও এরা আমায় व्नि न ! কয়দিন সে বসিয়া ভাবিতে লাগিল, এখানকার চাকুরীর মেয়াদ তো আর এই মাসটা-তারপর কি করা যাইবে ? স্কুলে এক নতুন মাস্টার কিছুদিন পূবে কোন এক মাসিক পত্রিকায় গল্প লিখিয়া দশটা টাকা পাঠাইয়াছিলেন। গল্পটা সেই ভদ্রলোকের কাছে অপু অনেকবার শুনিয়াছে! আচ্ছা, সেও এখানে বসিয়া বসিয়া খাতায় একটা উপন্যাস লিখিতে শুরু করিয়াছিল-মনে মনে ভাবিল-দশ-বারো চ্যাপ্টার তো লেখা আছে, উপন্যাসখানা যদি লিখে শেষ করতে পারি, তার বদলে কেউ টাকা দেবে না ? কেমন হচ্ছে কে জানে , একবার রামবাবুকে দেখাব ৷ নোটিশ-মত অপুর কাজ ছাড়িবার আর বিলম্ব নাই, একদিন পোস্টাফিসের ডাক-ব্যাগ খুলিয়া থাম ও পোষ্টকার্ডগুলি নাড়িতে-চাড়িতে একখানা বড় চৌকো, সবুজ রংয়ের মোটা খামের ওপর নিজের নাম দেখিয়া বিস্মিত হইল RGES