পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৫৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উডিয়া যাইতেছে, আর কিছুদিন দেরী করিলে যাওয়াই হইবে না। এখানেই পাতাল ভাবিয়াও কিছু ঠিক হইল না। একবার মনে হয় এটা ভাল, আবার মনে হয় ওটা ভাল। অবশেষে স্থির করিল স্টেশনে গিয়া সম্মুখে যাহা পাওয়া যাইবে, তাহাতেই উঠা যাইবে। জিনিস-পত্র বঁাধিয়া গুছাইয়া হাওড়া স্টেশনে গিয়া দেখিল, আর মিনিট পনেরো পরে চার নম্বব প্লাটফর্ম হইতে গষা প্যাসেঞ্জাব ছাডিতেছে । একখানা থার্ড ক্লাসের টিকিট কিনিয়া সোজা ট্রেনে উঠিয়া জানালাব ধারের একটা জায়গায় সে নিজের বিছানাট পাতিয়া বসিল। অপু কি জানিত এই যাত্রা তাহাকে কোন পথে চালিত করিয়া লইয়া চলিয়াছে ? এই চারটা বিশ মিনিটের গয়া প্যাসেঞ্জার-পরবর্তী জীবনে সে কতবার ভাবিয়াছে যে সে তো পাজি দেখিয়া যাত্রা শুরু করে নাই, কিন্তু কোন মহাশুভ মাহেন্দ্রক্ষিণে সে হাওড়া স্টেশনেব থার্ড ক্লাস টিকিট ঘরেব ঘুলঘুলিতে ফিরিঙ্গি মেয়ের কাছে গিয়া ৭।কখানা টিকিট চাহিয়াছিল-দশ টাকার একখানা নোট দিয়া সাডে পাচ টাকা ফেবৎ পাইয়াছিল। মাসুম যদি তাতার ভবিষ্যৎ জানিতে পারিত। অপু বৰ্তমানে এসব কিছুই ভাবিতেছিল না। এত বয়স হইল, কখনও সে গ্রাগুকৰ্ড লাইনে বেড়ায় নাই, সেই ছেলেবেলায় দুটিবার ছাড়া ইস্ট ইণ্ডিয়ান বেলেও আব্ব কখনও চড়ে নাই, রেলে চডিয়া দূরদেশে যাওয়ার আনন্দে সে ছেলেমানুষের মত উৎফুল্প হইয়া উঠিয়াছিল। বাস্তার ধারে গাছপালা ক্রমশঃ কিরূপ বদলাইয়া যায়, লক্ষ্য কবিবার ইচ্ছা! অনেকদিন হইতে তাহার আছে, বর্ধমান পর্যন্ত দেখিতে দেখিতে গেল। কিন্তু তার পবই অন্ধকারে আর দেখা গেল না । অপরাজিত সপ্তদশ পরিচ্ছেদ পাবদিন বৈকালে গয়ায় নামিয়া সে বিষ্ণুপদমন্দিরে পিণ্ড দিল। ভাবিল, আমি এসব মানি, বা না মানি, কিন্তু সবটুকু তো জানি নে ? যদি কিছু থাকে, বাপমায়ের উপকারে লাগে ! পিণ্ড দিবার সময় ভাবিয়া ভাবিয়া ছেলেবেলায় বা পরে ষে যেখানে মারা গিয়াছে বলিয়া জানা ছিল, তাহদের সকলেরই উদ্দেশ্যে পিণ্ড দিল। এমন কি, পিসিমা ইন্দির ঠাকরুণকেও সে মনে করিতে না পারিলেও দিদির মুখে শুনিয়াছে, তার উদ্দেশে-আতুরী ডাইনী বুড়ির উদ্দেশেও। ReS