পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপু হিসাব করিয়া বলিল-ত ধরা প্রায় আজ বিশ-বাইশ বছর আগেকার কথা । লীলা খানিকটা চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল-অপূর্ব, কেউ মোটরটা কিনবে বলতে পারে, তোমার সন্ধানে আছে । লীলার অতি সাধের গাড়িটা--এত কষ্টে পড়িয়াছে সে - লীলা বলিল,-আমি সে সব গ্রাহা করি নে, কিন্তু মা-ও ভাবেন-যাকৃ সে সব কথা । তুমি আমাকে কোথাও নিয়ে যাবে অপূর্ব ? -কোথায় ? --যেখানে হোক। তোমার সেই পোর্তে প্লাতায়-মনে নেই, সেই যে সমুদ্রের মধ্যে কোন ডুবো জাহাজ উদ্ধার করে বলেছিলে সোনা আনবে ? সেই যে “মুকুলে’ পড়ে বলেছিলে ? কথাটা অপুর মনে পড়িল। হাসিয়া বলিল, হঁ্যা সেই-ঠিক । উঃ, সে কথা মনে আছে তোমার ! --আমি বলেছিলাম, কেমন ক’রে যাবে ? তুমি বলেছিলে, জাহাজ কিনে সমূদ্রে যাবে। অপু হাসিল। শৈশবের সাধ-আশার নিস্ফলতা সম্বন্ধে সে কি একটা বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু হঠাৎ তাহার মনে পড়িয়া গেল, লীলাও এ ধরণের নানা আশা পোষণ করিত, বিদেশে যাইবে, বড় আর্টিস্ট হইবে ইত্যাদি-ওর সামনে আর সে কথা বলার আবশ্যক নাই । কিন্তু লীলাই আবার খানিকটা চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল-যাবে না ? যাও যাও-পরে-হি-হি করিয়া হাসিয়া কেমন একটা অদ্ভুত সুরে বলিল --সমূদ্র থেকে সোনা আনবে তো তোমারই-পোর্তো প্লাতা থেকে, না । • • • স্থাখো, এখনও ঠিক মনে ক’রে রেখেছি।--রাখি নি ? হি-হি-একটু চা খাবে ? লীলার মুখের শীর্ণ হাসি ও তাহার বঁধুনীহারা উদভ্রান্ত আলগা ধরণের কথাবার্তা অপুর বুকে তীক্ষ্ম তীরের মত বিধিল । সঙ্গে সঙ্গে বুঝিল এত ভালবাসে নাই সে লীলাকে আর কোনো দিন আজ যত বাসিয়াছে। -দুপুর বেলা চা খাব কি ?—সেজন্যে ব্যস্ত হয়ে না লীলা । লীলা বলিল-তোমার মুখে সেই পুরনো গানটা শুনি নি। অনেকদিন-সেই “আমি চঞ্চল হে’-গাও তো ? মেঘলা দিনের দুপুর। বাহিরের দিকে একটা সাহেব বাড়ির কম্পাউণ্ডে গাছের ডালে অনেকগুলি পাখি কলয়ৰ করিতেছে। অপু গান আরম্ভ করিল, verė R.