জন্যই। ঠিক তাই। বহু দূরে আর একটি সম্পূর্ণ অন্য ধরণের জীবন-ধারা বঁাশবনের আমবনের ছায়ায় পাখির কলকাকলীর মধ্য দিয়া, জানা-অজানা বনপুষ্পের সুবাসের মধ্য দিয়া-সুখে-দুংখে বহুকাল আগে বাহিত্যু-এককালে যার সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল তার-আজ তা স্বপ্ন-স্বপ্ন, কতকাল আগে দেখা স্বপ্ন ! গোটা নিশ্চিন্দিপুর, তার ছেলেবেলাকার দিদি, মা ও রাণুদি, মাঠ বন, ইচ্ছামতী সবই যেন অস্পষ্ট হইয়া গিয়াছে, ধোয়া ধোয়া মনে হয়, স্বপ্নের মতই অবাস্তব। সেখানকার সব কিছুই অস্পষ্ট স্মৃতিতে মাত্র আসিয়া দাড়াইয়া গিয়াছে । এই তো ফাল্গুন-চৈত্র মাস-সেই বঁাশপাতা ও বঁাশেব খোলার রাশিশৈশবের ভাঙা জানালাটার ধারে বসিয়া বসিয়া কতকাল আগের সে সব কল্পনা আনন্দপূর্ণ দিনগুলি, শীতরাত্রির সুখস্পর্শ কঁথার তলা-অনন্ত কালসমুদ্রে সে সব ভাসিয়া গিয়াছে কতকাল আগে । • • • কেবল স্বপ্নে, একদিন যেন বাল্যের সেই রূপো চৌকিদার গভীর রাত্রে ঘুমের মধ্যে কন্ডা হাক দিয়া যায়- ও বায় ম-শ-য়-য়, সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিন্দিপুর ফিবিয আসে, আবার বাডিব পাশেই সেই পোডো ভিটাতে বহুকাল আগের বসন্তু নামে, প্রথম চৈত্রের নানা জানা-অজানা, ফুলে বনভূমি ভরিয়া যায়, তাহাদের পুরানো কোঠাবাডির ভাঙা জানালার ধারে অতীত দিনের শত সুখদুঃখে পরিচিত পাখির দল কলকণ্ঠে গান গাহিয়া উঠে, ঠাকুরমারদের নারিকেল গাছে কাঠঠোকৃরার শব্দ বিচিত্র গোপনতায় তন্দ্রারিত হইয়া পডেস্বপ্নে দশ বৎসরের শৈশবটি আবার নবীন হইয়া ফিরিয়া আসে • এতদিন সে বাডিটা আর নাই- কতকাল আগে ভাঙ্গিয়া চুরিয়া ইট-কাঠি স্থূপীকার হইয়া আছে--তাহাও হয় তো মাটির তলায় চাপা পড়িতে চলিলসে শৈশবের জানালাটার কোনও চিহ্ন নাই---দীর্ঘদিনের শেষে সোনালী রোদ যখন বটগাছের ছায়া দীর্ঘতর করিয়া তোলে, ফিঙে-দোয়েল ডাক শুরু করেতখন আর কোনও মুগ্ধ শিশু জানালার ধারে বসিয়া থাকে না-হাত তুলিয়া অনুযোগের সুরে বলে না-আজ রাতে যদি মা ঘরে জল পড়ে, কাল কিন্তু ঠিক রাণু।দিদিদের বাডি গিয়ে শোবো-রোজ রোজ রাত জাগতে পারিনি বলে দিচিচ { অপুব একটা কথা মনে হইয়া হাসি পাইল । গ্রাম ছাড়িয়া আসিবার বছরখানেক আগে অপু একরাশ কড়ি পাইয়াছিল। তাহার বাবা শিন্যবাড়ি হইতে এগুলি আনেন। এত কড়ি আগে কখনও অপু ছেলেবেলায় একসঙ্গে দেখে নাই। তাহার মনে হুইল সে হঠাৎ অত্যন্ত N9N.
