পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুলিতেছে-তাহার জীবনে বন-বনানী নাই, নদীর মর্ময় মাই, পাখির কলম্বর, মাঠ, জ্যোৎস্না, সঙ্গী-সাথীদের সুখদুঃখ-এসব কিছুই নাই, অথচ কাজল অতি সুন্দর ভাবপ্রবণ বালক--তাহার পরিচয় সে অনেকবার পাইয়াছে । কাজল দুঃখ জানুক, জানিয়া মানুষ হউক। দুঃখ তার শৈশবে গল্পে পড়া সেই সোনা-করা জাদুকর ! ছেড়া-খোড়া কাপড় ঝুলি ঘাডে বেড়ায়, এই চাপ-দাড়ি, কোণে-কাদাড়ে ফেরে, কারুর সঙ্গে কথা কয় না, কেউ পোছে না, সকলে পাগল বলে দূর দূর করে, রাতদিন হাপর জালায়, রাতদিন হাপর জালায়। পেতল থেকে, রাং থেকে, সীসে থেকে ও-লোক কিন্তু সোনা করতে জানে, করিয়া ও থাকে । এই দিনটিতে বসিয়া ভাবিতে ভাবিতে সর্বপ্রথম এতকাল পরে একটা চিন্তা মনে উদয় হইল। নিশ্চিন্দিপুর একবারটি ফিরিলে কেমন হয় ? সেখানে আর কেউ না থাকৃ, শৈশব-সঙ্গিনী রাণু।দিদি তো আছে। সে যদি বিদেশে চলিয়া যায়, তার আগে খোকাকে তার পিতামহের ভিটাটা দেখাইয়া আনাও তো একটা কর্ত্তব্য ? পরদিনই সে কাশীতে লীলাদিকে পচিশটা টাকা পাঠাইয়া লিখিল, সে খোকাকে লইয়া একবার নিশ্চিন্দিপুর যাইতেছে, খোকাকে পিতামহের গ্রামটা দেখাইয়া আনিবে। পত্রপাঠ যেন লীলাদি তার দেওরকে সঙ্গে লইয়া সোজা নিশ্চিন্দিপুরে চলিয়া যায়। অপরাজিত চতুৰ্বিংশ পরিচ্ছেদ ট্রেনে উঠিয়াও যেন অপুর বিশ্বাস হইতেছিল না, সে সত্যই নিশ্চিন্দিপুরের মাটিতে আবার পা দিতে পারিবে-নিশ্চিন্দিপুর, সে তো শৈশবের স্বপ্নলোক ! সে তো মুছিয়া গিয়াছে, মিলাইয়া গিয়াছে, সে শুধু একটা অনতিষ্পষ্ট সুখস্মৃতি भांडा, कथमe छिल ना, मांश्- ७ ।। মাঝেরাপাড়া স্টেশনে ট্রেন আসিল বেলা একটার সময় । খোকা লাফ দিয়া নামিল, কারণ প্লাটফর্ম খুব নিচু। অনেক পরিবর্তন হইয়াছে স্টেশনটার, প্লাটফর্মের মাঝখানে জাহাজের মাস্তুলের মত উচু যে সিগন্যালটা ছেলেবেলায় তাহাকে তাক লাগাইয়া দিয়াছিল সেটা আর এখন নাই। স্টেশনের বাহিরে পথের উপর একটা বড় জাম গাছ, অপুর মনে আছে, এটা আগে ছিল না। Mihhma