পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঁাশবন, সেই বৈকাল সবই আছে, কিন্তু সে অপূর্ব জগৎটা আর মাই। এখন যা আনন্দ সে শুধু স্মৃতির আনন্দ মাত্র। এবার নিশ্চিন্দিপুর ফিরিয়া অবধি সে ইহা লক্ষ্য করিতেছে-এই বন, এই দুপুর, এই গভীর রাত্রে চৌকিদারের शइनि কি লক্ষ্মীপেঁচার ডাকের সঙ্গে এক অপূর্ব স্বপ্ন-মাখানো ছিল, দিগন্তরেখার ওপারের এক রহস্যময় কল্পলোক তখন সদা সর্বদা হাতছানি দিয়া আহবান করিত-তাদের সন্ধান আর মেলে না। সে পাখির দল মরিয়া গিয়াছে; তেমন দুপুর আর হয় না ; ষে চান্দ এমন বৈশাখীরাত্রে খড়ের ঘরের দাওয়ার ধারের নারিকেল পত্রিশাখায় জ্যোৎস্নার কম্পন আনিয়া এক ক্ষুদ্র কল্পনাপ্রবণ গ্রাম্য বালকের মনে মূল্যহীন, কারণহীন আনন্দের বান ডাকাইত, সে সব চাদ নিভিয়া গিয়াছে। সে বালকটিই বা কোথায় ? পচিশ বৎসর আগেকার এক দুপুরে বাপমায়ের সঙ্গে দেশ ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছিল, আর ফেরো নাই, জাওয়া-বঁাশের বনের পথে তার ছোট ছোট পায়ের দাগ অস্পষ্ট झ्छ्रेन्ना भ्रिाgछ दछनि । তার ও তার দিদির সে সব আশা পূর্ণ হইয়াছিল কি ? হায় অবোধ বালক-বালিকা ! • • • রোজ রোজ বৈকালে মেঘ হয়, ঝড় ওঠে। অপু বলে, রাণুদি, আম কুড়িয়ে আনি ? রানী হাসে। অপু ছেলেকে লইয়া নতুন-কেনা বাগানে আসিয়া দাড়ায়-সবাইকে আম কুড়াইতে ডাকে, কাহাকেও বাধা দেয় না। বাল্যের সেই পটুলে, তেঁতুলতলী, নেকে, বাঁশতলা,-ঘন মেঘের ছায়ায় জেলেপাড়ার আবালবৃদ্ধবনিতা ধামা হাতে আম কুড়াইতে আসে। অপু ভাবে, আহা জীবনের এই এদের কত আনন্দের কত সার্থকতার জিনিস। চারিধারে চাহিয়াঁ। দেখে, সমস্ত বাগানের তলাটা ধাবমান, কৌতুকপর, চীৎকাররত বালকবালিকাতে ভরিয়া গিয়াছে । দিদি দুৰ্গা, ছোট মেয়েটি, এই কাজলের চেয়ে কিছু বড়, পরের বাগানে আমি কুড়াইবার অপরাধে বকুনি খাওয়া কৃত্রিম উল্লাসভার হাসিমুখে একদিন ওই ফণিমনসার ঝোপের পাশের বেড়াটা গলিয়া বাহির হইয়া গিয়াছিলবহুকালের কথাটা । অপু কি করিবে। আমবাগানে ? এই সব গরীব ঘরের ছেলেমেয়েরা সাধ মিটাইয়া আম কুড়াইবে এ বাগানে, কেহ তাহদের বারণ করিবার থাকিবে না, বকিবার থাকিবে না, অপমান করিবার থাকিবে না, ফণিমনসার ঝোপের আড়ালে অপমানিত ছোট খুকিটি ধূলামাখা আঁচল গুছাইয়া লইয়া ফিরিয়া দাড়াইয়া মৃদু মৃদু তৃপ্তির হাসি হাসিবে• • • NGAN