পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৬৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন্ধ্যায় সতুকাকার দু’একজন বন্ধুবান্ধব এপাড়া-ওপাড়া হইতে আসিয়া জোটে। মোটা কালোমত একজন লোক-গলায় কষ্ঠি, ঠুকিয়া ঠুকিয়া খোলটাকে ঠিক-সুরে বঁাধে। পরে সবাই মিলিয়া কীর্তন শুরু করে। একদিন কাজলের খুব মজা লাগিয়াছিল। গানের মাঝামাঝি-যেখানে ‘কোথা যাও প্রভু নগর ছাডিয়া’ পদটা আছে সেখানে সবাই এমন ঠিা করিয়া দীর্ঘ টান দিয়াছিল যে কাজল হাসি চাপিতে পারে নাই। এক্সগুলি বয়স্ক মানুষকে এক সারিতে হা করিয়া বসিয়া থাকিতে দেখিলে কাহার না হাসি পায় ? কীর্তন তাহার খুব একটা ভাল লাগে নাই। গানের যে স্থানটিতে তাহার আমোদ হয়, সে স্থানটিতেই উহাব উঠিয়া পআিবষ্পরের গলা জডাইয়া ধবিয়া অশ্রুবিসর্জন করিতে থাকে। ব্যাপাব দেখিয়া প্রথম দিন সে অবাক হইয়া গিয়াছিল । রাণী তাহাকে খাওয়াইয়া বিছানায় শোওয়াই যা আসার পরেও এক একদিন অনেক রাত্রি পর্যন্ত গান হয়। শুনিতে শুনিতেই সে ঘুমাইয়া পড়ে। কখনো কখনো বিনা কারণে মাঝরাত্রে ঘুম ভাঙিয়া যায়-দেখে জানিলা দিয়া সুন্দর জ্যোৎসু আসিয়া বিছানায় পডিয়াছে। বাহিরের আতাগাছটা-ভূতে-বোম্বাই আমগাছটা-উঠানটা অপূর্ব জ্যোৎস্নায় ভাসিয়া যাইতেছে। ঘুম-ঘুম চোখে সেদিকে তাকাইয়া থাকিলে বেশ লাগে। মনে হয়, কেহ যেন ঐ জঙ্গল হইতে উঠানেব জ্যোৎস্নায় আসিয়া দাড়াইবে । তাহার গায়ে রূপকথার দেশের পবিচ্ছন্দ ; মুদু চন্দ্রলোকে সে একবাবি কাজলের দিকে তাকাইয়া হাসিবে-পরে ইশারায় ডাকিয়া আনিবে সঙ্গীদেব । একদল পাবীর দেশের লোকে উঠান ভরিয়া যাইবে । তাহাদেব ভাষা বোঝা যায় না-কিন্ম তাহা সঙ্গীতময় । উঠানের ধুলায় চাদের আলোয় ছায়া সৃষ্টি কবিয়া তাহাবা লীলায়িত ভঙ্গীতে নৃত্য করিবে। মাঝে মাঝে কাজল নিজে অবাক হইয়া যায়। তাহার চিন্তার গতি দেখিয়া । এই সময় বাবার কথা মনে পডে খুব। রাণুপিসি পাশে ঘুমাইতেছে। পিসিবি নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাইতেছে । জানলার বাতিরে উঠানে সেই অপার্থিব চাদের আলোর দেশ । এ সময় বাবা থাকিলে বেশ তইটত ! stन्मद যে ভাবতী হোকনা না কেন, বাবাকে বুঝাইয়া বলিবার দরকার পডে না-বাবা নিজেই কেমন সব বুঝিয়া লয়। বাবা হয়তো বলিতে পারিত, কেন সে এমন অদ্ভুত চিন্তা করে। শুধু এ সব কারণেই নহে-অন্য কারণও আছে । ঠ্যা, সে লুকাইবে না-বাবাকে দেখিতে ইচ্ছা করে, বাবার জন্য তাহার মন কেমন করিতেছে । a পরের দিন দুপুরে ললিতমোহন বাড়ুজ্যের ছেলে। চনু আসিয়া তাহাকে SS