পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থামাইয়া বলে--কি রে, ঘুম পেযেছে ? অমনি কাজল বলে, বাবা, আমাব ঘুম পায়নি। থামলে কেন ? বলো— * অপুকে গল্প চালাইতে হয়। এইভাবে কিছুদিনেব মধ্যেই কাজল বিশ্বসাহিতে্যুব শ্রেষ্ঠ কয়েকটি গল্প শুনিয়া ফেলিল। একদিন অপু কাজলকে ডাকিয়া বলিল নে, চল । কাল আমার সঙ্গে কোলকাতা চল। যাদুঘর যাবি বলছিলি, কাল যাদুঘব দেখাব’খন। আমাবও এমনি কাজ আছে কয়েকটা-সেই সঙ্গে সেয়ে ফেলব । পাবদিন সকালে আঁপু ছেলেকে লইয়া কলিকাতা রওনা দিল । কাজল একটা ঘিয়ে-বঙেব হাফপ্যােণ্ট অব সাদা। সার্ট পরিয়াছে। হৈমন্তী চুল আঁচডাইয়া দিমাছে পরিপাটি করিয়া । যাইবাব সময় অপুকে বলিযা দিয়াছে-ওকে ভাল কবে দেখেশুনে নিয়ে যাবে। যা দুষ্ট কাজল অনেকদিন বাদে কলিকাতা আসিল । আবাব সেই বড় বড় বাডি, লোকজন, হৈ-চৈ, রাস্তায় গাউীর ভেঁপু, ট্রামের ঘণ্টা। সব মিলিয়া জিনিসটি মন্দ লাগে না । বাবা তাহাকে বলিয়াছে বড় হইলে তাহাকে কলিকাতার কলেজে পড়াইবে । কলিকাতার বড় বড় কলেজের গল্প বাবা তাহার নিকট কবিয়াছে, সেখানে লাইব্রেবীতে কত বই আছে-তােহা নাকি গণিয়া শেষ করা যায় না । এ সমস্ত বই সে পড়িবে। অপুর কাজ ছিল বিকালে। খুব সকালে রওনা হওয়ায় তাহারা বেশী বেলা হইবার আগেই কলিকাতা পৌছিয়াছিল। ট্রামে করিয়া অপু এসপ্ল্যানেডে আসিয়া নামিযা বলিল—এইটুকু চল হেটে যাই। কেমন দেখতে দেখতে যাওয়া যাবে। যাদুঘরে ঢুকিতেই কাজলের সেই অদ্ভুত ভাবটা হইল-যাহা সে কিছুতেই কাহাকেও বুঝাইয়া উঠিতে পারে না । মাথার মধ্যে কেমন একটা ঝিম-ঝিম ভাব । যাদুঘবের একটা নিজস্ব গন্ধ আছে, তাহা কাজলকে পুবানো দিনের কথা মনে করাইয়া দেয়। নিজের জীবনের কথা নহে, বাবার কাছে শোনা ইতিহাসের কথা-মানব-সৃষ্টির আগেকার পৃথিবীর কথা । সমস্ত আবেদনটা সে ঠিক ধরিতে পারে না । কিন্তু তাহার মনে হয়, এই জীবনের বাহিরে আর একটা বৃহত্তর জীবন তাহাকে হাতছানি দিয়া ডাকিতেছে। সারাদিন ভারী আনন্দে কাটিল। প্রাচীন কূপ হইতে গুহামানবের মাথার খুলি পর্য্যন্ত সব-কিছুই কাজলের কাছে সমান আকর্ষণীয়। প্রাচীন জীবজন্তুর কঙ্কালগুলি যে ঘরে আছে, সে ঘর ছাড়িয়া কাজল আর নড়িতে চায় না ! উল্কাপিণ্ডটার সামনে দাড়াইয়া উত্তেজনায় তাহার চোখ কোটির হইতে বাহির 鷲蕾