পাতা:অবতার.djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৬ অবতার মমির মত আরকে জারিয়ে রাখতে পারি ; কিন্তু তা হলে খোজ হবে, খানাতল্লাসি হবে, আমার বাকুস সিন্দুক খোলা হবে, আর কত কি বিরক্তিকর প্রশ্ন আমাকে জিজ্ঞাসা করবে।” এইখানে ডাক্তারের মাথায় বেশ একটা মতলব আসিয়া জুটিল ; অমনি তিনি একটা কলম লইয়া তাড়াতাড়ি এক-তক্ত কাগজের উপর কয়েক ছত্র লিখিয়া ফেলিলেন । তাতে এই কথাগুলি ছিল — “আমার কোন আত্মীয় না থাকায়, কোন উত্তরাধিকারী না থাকায়, আমার সমস্ত সম্পত্তি আমি সাভিলের অক্টেভকে দিয়া যাইতেছি ; আমি তা’কে বিশেষরূপে স্নেহ করি । নিম্নলিখিত টাকা শোধ করিয়া বাহ থাকিবে সমস্তই তাহার প্রাপ্য —এক লক্ষ টাকা সিংহলের ব্রাহ্মণহাসপাতালে, শ্রাস্ত বা পীড়িত বৃদ্ধ জীবজন্তুদের আতুরাশ্রমে দিলাম। আমার ভারতীয় ভূত্যকে ও আমার ইংরেজ ভৃত্যকে বারে হাজার টীকা দিলাম। আর এক কথা, মনুর মানব ধর্ম্মের পুথিটা মাজারীণ পুস্তকালয়ে যেন ফেরৎ দেওয়া হয়।” একজন জীবিত ব্যক্তি মৃতব্যক্তিকে উইলস্থত্রে দানপত্র লিখিয়া দিতেছে, আমাদের এই বিস্ময়জনক অথচ বাস্তব ইতিহাসের মধ্যে ইহাও একটা কম অদ্ভুত ব্যাপার নহে;কিন্তু এই অদ্ভুত ব্যাপারের রহস্ত এখনি উদ্ভাসিত হইবে। অক্টেভের পরিত্যক্ত দেহে প্রাণের উত্তাপ এখনো ছিল। ডাক্তার অক্টেভের এই দেহ স্পর্শ করিলেন—ম্পর্শ করিয়া অতীব ঘৃণার সহিত আয়নায় আপনার মুখ দেখিলেন ; দেখিলেন, মুখ বলি-রেখায় আচ্ছন্ন, এবং কষ-লাগানো হাঙ্গর-চামড়ার মত শুষ্ক ও কর্কশ । দর্জি নুতন পরিচ্ছদ আনিয়া দিলে পুরাতন পরিচ্ছদ পরিত্যাগের সময় মনের যে ভাব হয়,সেই ভাবে ডাক্তার আপন মুখ দেখিয়া একটা মুখভঙ্গী করিলেন। তাহার পর, সন্ন্যাসী ব্রহ্মলেগেমের মন্ত্রটা আওড়াইলেন।