পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু বন্ধু, তুমিও য়াকে ডাক, আমিও তাকে ডাকি । ওরা যা বলে বলুক, তুমি আমি এক আলোরই দূত।" কুঁকড়ে বনের শিয়রে চেয়ে বললেন, ‘গেয়ে চলে, গেয়ে চলে। রাত্রির স্বপন । আলোর দূত।" আবার স্বর উঠল আঁকাশ ছাপিয়ে তারার মধ্যে গিয়ে ঝংকার দিয়ে। বনের সবাই চাদের আলোয় বেরিয়ে দাড়াল সে মুর শুনে। গাছের তলায় আলো ছায়া বিছানো, তারি উপরে হরিণ দাড়িয়ে শুনছে ; কোটরের মধ্যে চাদের আলো পড়েছে, সেখান থেকে মুখ বাড়িয়ে বাচ্ছারা সব শুনছে ; বনের পোক-মাকড় পশু-পাখি সবার মনের কথা এক করে নিয়ে স্বপনপাখি বনের শিয়রে গাইছে ; জোনাকির ফুলকি, তারার প্রদীপ, চাদের আলোর মাঝে—নীল আকাশের চাদোয়ার তলায়। ব্যাঙের কড়া সুর থেকে আরম্ভ করে বিবির ঝিমে সুরটি পর্যন্ত সবই গান হয়ে এক তানে বাজছে যেন এই স্বপন পাখির মিষ্টি গলায়। কুঁকড়ে অবাক হয়ে বলে উঠলেন, “এ যে জগৎজোড়া গান, এর তো জুড়ি নেই। স্বপনপাখি কার কানে তুমি কী কথা বলে যাচ্ছ কে তা জানে। অমনি কাঠবেড়ালি বললে, অমনি শুনছি, ছুটি হল, খেলা করে । খরগোশ বললে, ‘আমি শুনছি, শিশিরে ভেজা সবুজ মাঠে চলো। বনবেড়াল বললে, "শুনছি, চাদের আলে৷ এল । মাটি বললে, ‘বিষ্টির ফোটা পড়ছে যেন।' জোনাক বললে, ‘তারা আর তারা । কুঁকড়ে তারার দিকে চেয়ে বললেন, ‘তোমরা কী শুনছ আকাশের তারা । তারা সব উত্তর করলে, “আমরা নয়নতারার নয়নতারা ' কাছে সোনাল-পাখি দাড়িয়েছিল, কুঁকড়ো তাকে শুধোলেন, আর তুমি কী শুনছে । সে এক মনে শুনছিল, কোন কথা কইলে না, কেবল ‘ওঃ ... ব’লে নিশ্বাস ফেললে । কুঁকড়ে সোনালিকে বললেন, যে যা ভালোবাসে স্বপনপাখি তাকে সেই গানই শুনিয়ে যায়। আমি কী শুনলেম জানো ? — দিন এল, গান গাও। ভোর ভয়ি, ভোঁর ভয়ি .. ' vఖ