পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনালি মুখ টিপে হেসে মনে-মনে বললে, ‘ভোরের বড়ে দেরি নেই, তুমি না গাইলেও ভোর আজ আসে কি না দেখাব তোমায়।’ কুঁকড়ো একেবারে মোহিত হয়ে গান শুনছিলেন ; ভোর হচ্ছে, কিন্তু সেটা আজ তার খেয়ালই হল না ; তিনি বলে উঠলেন, ‘ওগো স্বপনপাখি, তোমার এ গানের পরে, আর কোন লজ্জায় আমি গাইব ? স্বপনপাখি বললে, গান বন্ধ তো করতে পার না তুমি . কুঁকড়ো বললেন, কিন্তু এর পরে সেই রগরগে আগুনের মতে রাঙ। স্থর কি কারো গাইতে ইচ্ছে হয়। স্বপন উত্তর দিলে, “আমার গান আমারি মনে হয় যে, সময়ে সময়ে বড়ে বেশি নীল । আসল কথাট। কী জানো ? যে সুরের স্বপ্ন তোমারো মনে, আমারো মনে জাগছে, সেটিকে সুরে বসাতে তোমারো সাধ্য হল না, আমারো ক্ষমতায় কুলোল না কোনোদিন । গানের পরে মন সে বলবেই, হল ন হল না, তেমনটি হল না, এ কিছুই হল না।’ কুঁকড়ে বললেন, মুরের পরশে ঘুম আসবে, তাকেই বলি গান।’ স্বপন বললে, ‘গানের ডাকে জেগে উঠল, কাজে লাগল –তন্দ্র ছেড়ে, তাকেই বলি গান ? কুঁকড়ে বললেন, ‘আমার গান কি কোনোদিন কারু চোখে এক ফোট জল আনতে পারবে।’ স্বপনপাখির উত্তর হল, আর আমার গান কি কানোদিন কিছু জাগিয়ে তুলবে। বন্ধু, দুঃখু নেই গেয়ে চলো, যেমন সুর পেয়েছি, ভালো হোক, মন্দ হোক, গেয়ে যাই যতক্ষণ— ? ‘হম’ করে বন্দুকের শব্দ হল। একটা আগুনের হলকা বিদ্যুতের মতো বনের শিয়রে চমকে উঠল । একটি ছোটো পাখি গাছের শিয়র থেকে কুঁকড়োর পায়ের কাছে ঝরা পাতার মতো ঝরে পড়ল। সোনালি চিৎকার করে উঠল, ‘স্বপনপাখি রে, স্বপনপাখি ।” কুঁকড়ে ঘাড় হেঁট করে বলে উঠলেন, ‘ওরে মানুষ কী নিষ্ঠুর । কী নির্দয় । স্বপনপাখি তার দিকে কালো চোখ মেলে একটিবার চেয়ে দেখলে, তার পর একবার তার ডান ছুটি কেঁপে উঠে স্থির হল । ፳ዓ ۹-سsts \e"