পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপর আবার সোনাতোনকে বিয়ে দেবে তুমি ? সোনার মা নাকি সুরে বললেন, তা গরীবের যদি একটি বিয়ে হয়ে যায় তো মন্দ কী ? সোনাতোন আর থাকতে পারলে না, তাড়াতাড়ি বলে উঠল, “দেখ বৌঠাকরুন, ওই আমাদের নোটাে তাতির পাচ বছরের মেয়েটি দেখতে শুনতে কালো-কোলো মোটা-সোটা, বেশ আমার সঙ্গে মানায়, কিছু পয়সা পেলেই তার বাপ দিয়ে ফেলে বিয়েট । সোনা অমনি তাড়াতাড়ি বলে উঠল, সে হবে না সোনাতোন, বোহিমকে তোমার বেী করতে হবে, না হলে আমি বিয়ে দেব না।’ খাতাঞ্চি সোনাকে কোলে তুলে বললেন, ‘এই আমার মেয়ের মতো কথা বলেছ ; এ বিয়েতে আমি খুব রাজি আছি।’ সোনা বাপের গলা ধরে বললে, “বাবা, বোহিম বলেছে সোনার চাবি শিকল তাকে যৌতুক দিতে হবে, তবে সে বিয়ে করবে। খাতাঞ্চি ভয় পেয়ে বললেন, ‘তা সোনাতোন সেটা গড়িয়ে দেবে ; এখন যাও, আমি চট করে একটা বিয়ের ফর্দ লিখে ফেলি।” সোনা দৌড়ে, বিয়ের খবর বোহিমকে জানাতে ছুটল আর খাতাঞ্চি কপালে চশমা তুলে সোনার মাকে বললেন, ‘এসব বুদ্ধি যাতে ওর মাথায় না আসে তার বিশেষ চেষ্টা করোগে । সোনাতোন ! বুড়ে বয়সে তোমার খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই – ছেলে-মেয়েদের মাথায় যত কু-মতলব দিচ্ছ, এবার পুজো-বকশিশ চেয়ে, কেমন পাও দেখব । যাও, এখন বিয়ে যাতে নিখরচায় হয়ে যায় তারি চেষ্টা করোগে । সোনা যখন বোহিমের কপালে সি দুর দিয়ে সোনাতোনকে বিয়ের জন্যে ডাকতে এল, তখন, আঙুটি পাণ্ডটি সোনাতোনের মাথায় কাগজের টোপর দিয়ে বর সাজাচ্ছে । তারা বললে, ‘রোসো, এখনো সাজানো হয়নি আমাদের ' সোনাতোন বললে, “আমার সোনার চাবি-শিকলি এখনো সেকরা তো দিলে না, দিদিমণি ? সোনা একটু ভাবিত হয়ে বললে, তবে কী হবে সোনাতোন ? এদিকে লগ্ন যে বয়ে গেল !" $38