পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখছেন যেন খানিক-পাখি খানিক-মানুষ একজন কার চেহারা । নিচে লেখা রয়েছে পুতু। আঙুটি পাণ্ডটির খাতায় পুতুর ছবিগুলো একটু ঝাপসা কিন্তু সোনার খাতায় পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। “ পুতুর চেহারাটি কতকটা কুঁকড়ে কতকটা মানুষ। এ ছাড়া, বোম্বেটের জাহাজ, বর্গির হাঙ্গামারও ছবি দেখা যেতে লাগল। সোনাতোন বর্গি বোম্বেটের গল্প ছেলেদের কাছে করত, কিন্তু পুতু’ কে ? একে তো কেউ চেনে না, এর কথাও তো কোনোদিন হয়নি। সোনার মা একদিন কথায়-কথায় সোনাকে শুধোলেন, ‘পুতু কাদের ছেলে রে, সোনা ? সোনা বললে, ‘তা কী জানি —সে পুতু’ (' পুতু’ যে কে, তা খুব ছেলেবেলার কথা মনে করেও সোনার ম৷ ধরতে পারলেন না । ছেলেবেলায় ভয় পেলে ঠানদিদি একটা ছড়া বলতেন, তাতে একজন পুতের কথা ছিল । তার কেবল গোড়াটা মনে আছে, ভূত আমার পুত, শাখিনী আমার ঝি । এই পুতু যদি সেই পুতু হয় । সোনা বললে, ‘নিশ্চয় মা, ও কর্তামায়ের সেই ‘পুতুই হবে।’ সোনার মা বললেন, দূর, সে কতদিনের কথা, সে কি আর ছোটো পুতটি আছে ? সে এখন মস্ত হয়ে পুত্রবান হয়ে গেছে।’ সোনা অমনি বলে উঠল, না মা, তুমি জানো না । পুতু তো কখনো বড়ো হবে না, চিরকাল সে ঠিক এই আমি যতটুকু ততটুকু থাকবে ।’ সোনার মা শুধোলেন, ‘তুই কেমন কবে জানলি, পুতু আর একটুও বাড়বে না ? সোনা বললে, “তা আমি জানিনে, কিন্তু দেখো, কিছুতেই সে বড়ো হবে না। মোমের পুতুলটির মতো ছোটােই থাকবে।’ সোনার মায়ের সেইদিন থেকে ধুকপুকনি জাগল। পুতু যদি ভূত হয়, তবে তো এইবেলা রোজা ডাক ভালো। তিনি খাতাঞ্চিমশাইকে পুতুর কথা একদিন বললেন । খাতাঞ্চিমশাই হেসে উড়িয়ে দিলেন আর বললেন, "এ নিশ্চয় ১২৩